বাংলাদেশ ইস্যুতে আজ মঙ্গলবারও সরগরম ভারতের সংসদ অধিবেশন। বিধানসভার পরে এবার লোকসভাতেও বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য জাতিসংঘকে অনুরোধ জানাতে বললেন মমতার দলের সাংসদরা। প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তারা। অন্যদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও অনুপ্রবেশ ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার।
আদানি ইস্যুতে গত সপ্তাহে বারবার মুলতুবির পর মঙ্গলবার পুনরায় শুরু হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। এদিনও আদানি ঘুষকাণ্ড নিয়ে সরব হয়ে মুলতবি প্রস্তাব পেশ করে বিরোধীরা। এরপরেই সংসদ থেকে ‘ওয়াক আউট’ করে তারা। কিন্তু লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার উদ্যোগে পুনরায় শুরু হয় শীতকালীন অধিবেশন। শর্ত ছিল দুটি বিষয়ে কথা বলতে দিতে হবে বিরোধীদের। এক বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার ও দুই উত্তরপ্রদেশের সম্বল মসজিদ কাণ্ড। সেই মতোই এই দিন সংসদে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু এবং হিন্দুদের ওপর অত্যাচার নিয়ে বক্তব্য রাখেন উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার লোকসভায় বাংলাদেশ ইস্যুতে তৃণমূল নেত্রীর দেখানো পথে হাঁটেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল রাজ্য বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দাবি জানান, এদিন লোকসভায় সেই দাবিই তুলে ধরেন সুদীপ। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চলছে, খুন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে আমাদের প্রতিবেশী, আমাদেরই রাজ্যের লাগোয়া। আমাদের আবেদন, বাংলাদেশে অবিলম্বে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য ভারত সরকার জাতিসংঘকে আবেদন করুক। ভারত সরকার একেবারে নিশ্চুপ, তার কারণ সরকারই ভাল জানে। আমাদের মু্খ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই মেনে নেব আমরা, একসঙ্গে কাজ করব। অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, বাংলাদেশ থেকে শরণার্থীরা সীমান্ত পেরিয়ে আমাদের রাজ্যে ঢোকে। সরকারকে এ নিয়ে অবস্থান জানাতে হবে। বিদেশমন্ত্রী সংসদে এসে এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিন।’
তৃণমূলের আর এক সাংসদ কীর্তি আজাদ বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে ঠিক বলেছেন। ভারত সরকার কী করছে? ওরা (বাংলাদেশ) আমাদের প্রতিবেশী। সেখানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। সরকার কিছু না করে… আমাদের নেত্রী ঠিকই বলেছেন। জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ করা উচিত।’
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি মমতা সরকারকেই দায়ী করেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তাঁর বক্তব্য, ‘বাংলাদেশে বেছে বেছে হিন্দুদের নির্যাতিত হতে হচ্ছে। এপারে এসেও শান্তি নেই। দিনের পর দিন অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে আমাদের জনসংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছে। সরকারি মদতেই হচ্ছে। তছনছ হচ্ছে সরকারি সম্পদ। ভাঙা হচ্ছে মন্দির। বেলডাঙা, হাওড়া, উলুবেড়িয়ার মতো জায়গায় সরকারি মদতে দাঙ্গা ছড়াচ্ছে।’