গাজীপুর সদরে জায়ান্ট টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার কর্তৃপক্ষ এবং সহকর্মী মেশিন অপারেটরের অবহেলায় এক শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার রাতে এ দুর্ঘটনায় নিহত নয়ন মিয়া ময়মনসিংহ সদরের চর বড়বিলা (চরঈশ্বরদিয়া) গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি মেম্বারবাড়ী (বানিয়ারচালা) এলাকায় ভাড়া থেকে কারখানায় সহকারী অপারেটর (হেলপার) হিসাবে চাকরি করতেন।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম জানান, নয়ন মিয়া জায়ান্ট টেক্সটাইল কারখানায় সহকারী অপারেটর (হেলপার) হিসাবে কাজ করতেন। শনিবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তার ডিউটি ছিল। শিফট শেষে অন্য কর্মীরা চলে গেলেও কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত কাজের জন্য তাকে রেখে দেয় এবং কাজ করতে বাধ্য করে। তবে পরবর্তী শিফটের কাউকে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ অবগত করেনি। নয়ন বস্তায় ভরে ওয়াশিং মেশিনে কাপড় নিয়ে ঢুকেছিলেন। পরবর্তী শিফটের অপারেটর এসে মেশিন পরীক্ষা না করেই সুইচ চালু করলে নয়ন মেশিনের ভেতরে মারা যান। রাত ৩টায় ওয়াশিং মেশিন অপারেটর কাপড় বের করতে গিয়ে ভেতরে লাশ দেখে চিৎকার করেন এবং কারখানার ইনচার্জকে জানান। এরপর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ওয়াশিং মেশিনের গরম পানিতে দগ্ধ নয়নের লাশ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ জনকে আটক করেছে।
নিহতের স্ত্রী ইমা আক্তার বলেন, আমার স্বামীর রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি ছিল। পরে কর্তৃপক্ষ তাকে জোর করে আরও দুই ঘণ্টা ডিউটি করায়। তাদের অবহেলার কারণে আমার স্বামী মারা গেছে।
জায়ান্ট টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক সোহেল রানা জানান, নয়ন মিয়ার ডিউটি ছিল রাত ৮টা পর্যন্ত। কাজের চাপ থাকায় তাকে আরও দুই ঘণ্টার জন্য রাখা হয়। টিফিন বিরতির সময় অপারেটর চলে গেলেও নয়ন বস্তা টানছিলেন। টিফিন শেষে অপারেটর এসে তাকে না পেয়ে মেশিন চালু করে, যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।
জয়দেবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার জানান, ঘটনাস্থল থেকে শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, জায়ান্ট টেক্সটাইল কারখানায় শ্রমিক নিহতের ঘটনায় তার স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।