Skip to content

৪১ দফা প্রস্তাবনা নিয়ে জাবিতে শিবিরের সংবাদ সম্মেলন

    ৪১ দফা প্রস্তাবনা নিয়ে জাবিতে শিবিরের সংবাদ সম্মেলনprothomasha.com

    জাকসুসহ সকল ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও ক্যাম্পাসে সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিচার ও গবেষণার জন্য বাজেট বরাদ্দ বদ্ধিসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে ৪১ দফা প্রস্তাবনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

    আজ রবিবার সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকির সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সেক্রেটারি মহিবুর রহমান মুহিব। এ সময় সভাপতি হারুনুর রশিদ রাফি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

    ৪১ দফা প্রস্তাবনায় তারা জুলাইয়ে আহত বিপ্লবীদের স্বাস্থ্যসেবা ও পুনর্বাসন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নির্যাতন ও আক্রমণের তদন্ত এবং বিচার, জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি সংরক্ষণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে শহীদদের নামে নামকরণ ও ১৬ই জুলাইকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা করার দাবি জানান।

    এছাড়া পূর্ববর্তী উপাচার্য ফারজানা ইসলামের আমলে সংগঠিত উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতিসহ স্বৈরাচার আমলের সকল উপাচার্যের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ, হল দখল, ছাত্র নিপীড়ন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিচার, খুন ও হত্যার বিচারের নিশ্চয়তা দাবি করেন।

    এদিকে ক্যাম্পাস সংস্কারের প্রস্তাবনায় তারা জাকসুসহ হল সংসদ ও বিভাগওয়ারী শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন, আবাসিক হলের নিয়মতান্ত্রিক আসন বণ্টন, আবাসিক হলসমূহে সেবা বৃদ্ধি ও উন্নত ডাইনিং ব্যবস্থা, কাফেটেরিয়া- ক্যান্টিন ও বটতলার খাদ্যমান উন্নয়ন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশগম্য ক্যাম্পাস, উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস স্থাপন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পর্যাপ্ত ধর্মীয় উপাসনালয়ের ব্যবস্থা, প্রতিটি বিভাগে পর্যাপ্ত অবকাঠামো বরাদ্দ, পর্যাপ্ত শিক্ষা বৃত্তি, আর্থিক সহায়তা এবং শিক্ষা ঋণ প্রদান, পরীক্ষার সময়সূচি সংস্কার ও একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কথা উল্লেখ করেন।

    এছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ২০১৮’এর নিবর্তনমূলক ধারাসমূহ বাতিল করে অধ্যাদেশ সংস্কার করার দাবিও জানান তারা।

    এর পাশাপাশি তারা নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, আদিবাসী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন ও মননশীল সাংস্কৃতিক পরিবেশ বিনির্মাণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে তারা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সকল প্রকার মাদক ব্যবসা এবং মাদক সেবনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ও ক্যাম্পাস নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি জানান।

    বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার মানোন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তারা প্রস্তাবনায় বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের গবেষণা সহকারী ও পাঠদান সহকারী হিসেবে বৈতনিকভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি, গবেষণার জন্য বাজেট বরাদ্দ, অযাচিত ফি বাতিল ও ফি কমানো, ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার, বাণিজ্যিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দিতে হবে।

    সেই সঙ্গে তারা প্রশাসনিক আধুনিকীকরণ, নিয়োগ পদ্ধতি সংস্কার, উচ্চমানের শিক্ষক বেতন কাঠামো, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল সুবিধা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণের দাবি জানান।

    এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেক্রেটারি মহিবুর রহমান মুহিব বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগরে ছাত্রশিবিরের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে ২৪ সালের জানুয়ারি মাসে। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠার একদিন পর ৮ ফেব্রুয়ারিতেই জাবিতে কার্যক্রম শুরু হয়। আমরা কোনো দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি করছি না। ছাত্রশিবির একটি স্বতন্ত্র ছাত্রসংগঠন। বিগত ফ্যাসিবাদের সময় সাধারণ শিক্ষার্থী ছাত্ররাজনীতি বলতেই গণরুম-গেস্টরুম, হল দখল, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ইত্যাদি দেখেছি। ছাত্রশিবির একটি আদর্শিক ছাত্র সংগঠন, তারা আদর্শের প্রচার করবে। ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ¦ল ইতিহাস ধারণ করে আমরা কোনো পেশি-শক্তির রাজনীতি করতে চাই না। শীঘ্রই আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হবে।’

    উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর গত ২৯ অক্টোবর শীর্ষ তিন নেতৃত্বের প্রকাশ্যে আসার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের প্রকাশ্যে কার্যক্রম শুরু হয়।