Skip to content

হাড় মজবুত হয় যেসব খাবার খেলে

    হাড় মজবুত হয় যেসব খাবার খেলে prothomasha.com

    সুস্থ শরীরের ভিত হল মজবুত হাড়। কিন্তু একটা বয়সের পর হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে। যেখান থেকে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শুরু থেকেই যদি হাড়ের যত্ন নেওয়া যায় তবে এই ধরনের সমস্যা কিছুটা হলেও এড়ানো সম্ভব।শক্তিশালী হাড়ের জন্য সুষম খাদ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাড় সুস্থ রাখতে প্রধানত যথেষ্ট ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি প্রয়োজন। তাই সুষম খাদ্য গ্রহণ সুস্থ হাড়ের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি পেতে সাহায্য করে।হাড়কে মজবুত ও শক্তিশালী করে হাড়ের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নিয়মিত কি কি খাবার খাওয়া প্রয়োজন তা দেয়া হল এখানে।

    ১. দই

    দই প্রোবায়োটিক, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ এবং ফোলেটের একটি ভাল উৎস। গবেষণায় জানা গেছে যে নিয়মিত পর্যাপ্ত দই খাওয়ার ফলে হাড়ের ফ্র্যাকচার প্রতিরোধ করা যেতে পারে। এ ছাড়া হাড় দুর্বল হলে নিয়মিত ক্যালসিয়ামযুক্ত দই খাওয়া ভাল।

    ২. দুধ

    ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন এ এবং ডি এর আরেকটি ভালো উৎস হল দুধ। দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য ক্যালসিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ উৎস এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নিয়মিত গরুর দুধ খেলে হাড় মজবুত হয় এবং অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করা যায়। তবে ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা থাকলে দুধ না খাওয়াই ভালো।

    ৩. সবুজ শাক

    সবুজ পাতাযুক্ত শাক যেমন পালং শাক, পাতা কপি, লেটুস ইত্যাদি ক্যালসিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ও ভিটামিন কে এর দুর্দান্ত উৎস। তাই শক্তিশালী হাড় পেতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে প্রতিদিন অন্তত তিনটি ভিন্ন ধরনের শাক খাওয়া উচিত।

    ৪. পনির

    পনির দুধ থেকে তৈরি হয় বিধায় এটি ক্যালসিয়ামের সমৃদ্ধ উৎস। পনিরে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১২, জিংক এবং ফসফরাসে ভরপুর। পনির শুধুমাত্র খাবারে স্বাদ যোগ করে না, এটি হাড়কেও ভঙ্গুর হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। তবে আপনি যদি ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু হন তবে ল্যাকটোজবিহীন চেডার পনির খেতে পারেন।

    ৫. সামুদ্রিক মাছ

    বিভিন্ন ধরনের মাছ যেমন সার্ডিন, টুনা, ক্যাটফিশ, স্যামনের মতো মাছ হল ভিটামিন ডি-এর শক্তিশালী উৎস। ভিটামিন ডি হাড়ের খনিজকরণে সহায়তা করে। ভিটামিন ডি ছাড়া হাড় শরীর থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারে না।

    ৬. ডিম

    ডিমের কুসুম হল ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন কে-এর মতো চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিনের একটি বড় উৎস। শরীর থেকে হাড়ে ক্যালসিয়াম শোষিত হতে এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ভিটামিন ডি অপরিহার্য। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন দুটি ডিম খাওয়া উচিত।

    ৭. আমন্ড বাটার

    কাজুবাদামের মাখন বা আমন্ড বাটার প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামের একটি বড় উৎস। এই ভেগান মাখনে কোলেস্টেরল কম থাকে এবং স্বাদও সমৃদ্ধ ও ভালো হয়। এটি হাড়ের দেখাশোনার পাশাপাশি হার্টকেও রক্ষা করে থাকে। প্রতিদিন ১-২ টেবিল চামচ করে কাজুবাদামের মাখন খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী।

    ৮. ব্রোকলি

    ব্রোকলি এমন একটি সবজি যেটা শরীরের সব অঙ্গের জন্য উপকারী ও গুরুত্বপূর্ণ। এটি ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ফোলেট এবং ভিটামিন কে দ্বারা সমৃদ্ধ একটি সবজি। প্রতিদিন ব্রকলি খেলে হাড় ও দাঁত মজবুত হয়। এ ছাড়া এটি ওজন কমানোর পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।

    ৯. বীজ

    বীজ হল ক্যালসিয়ামের সেরা উৎস। তিনের বীজ, সূর্যমুখী বীজ, তরমুজের বীজ, কুমড়ার বীজ বা চিয়া বীজ, এগুলি প্রোটিন, খাদ্যতালিকাগত ফাইবার, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ফসফরাস, আয়রন এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ। নিয়মিত নাস্তার সাথে বা স্মুদি, সালাদ, বা ডিম এবং অ্যাভোকাডো টোস্টের সাথে যেকোন বীজ এবং তিল খাওয়া শরীর ও হাড়ের জন্য স্বাস্থ্যকর।

    ১০. বাদাম

    বাদামে স্বাস্থ্যকর চর্বি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিন থাকে। নানা ধরনের গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন হরেক রকমের মিশ্র বাদাম খাওয়া সামগ্রিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সহায়তা করে।

    যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন

    ১. ওজন কমাতে গিয়ে অনেকে ডায়েট করে এবং ক্যালোরি গ্রহণ কমিয়ে দেয়। এর ফলে শরীর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পুষ্টি হারায় ও হাড় এবং পেশী দুর্বল হয়ে যায়। সুতরাং ডায়েট এড়িয়ে ক্যালোরি গ্রহণ পর্যাপ্ত রাখতে হবে।

    ২. অস্টিওপোরোসিসে ভুগলে নোনতা খাবার যেমন ফ্রাই, চিপস, ফ্রাইড চিকেন, সসেজ ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিত। উচ্চ পরিমাণে লবণ হাড়ের স্বাস্থ্যকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।

    ৩. অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণে হাড়ের খনিজ ঘনত্ব কমে যেতে পারে। বেশ কিছু গবেষণা প্রমাণ করে যে মদ্যপানকারীদের অস্টিওপরোটিক হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

    ৪. ক্যাফেইন সাধারণত চা, কফি এবং কয়েকটি শক্তি পানীয়তে পাওয়া যায়। প্রতিদিন অত্যাধিক ক্যাফেইন গ্রহণ করা হাড়ের স্বাস্থ্যের অবনতির পাশাপাশি হাড়ের ফ্র্যাকচারের প্রবণতা তৈরি করতে পারে।

    ৫. কোমল পানীয় কোনোভাবেই শরীরের জন্য ভালো নয়। কোলা বা কোমল পানীয় কিডনির পাশাপাশি হাড়ের ক্ষতি করে থাকে।