মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদকসম্রাট ওসিয়েল কার্ডেনাস গুইলেনকে মার্কিন কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।যিনি ছিলেন একজন গাড়ি মেকানিক; করেছেন পুলিশে কাজও। কিন্তু ১৯৯৯ সালে আকস্মিক মেক্সিকোতে গাল্ফ কার্টেলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন ওসিয়েল। রাতারাতি বনে যান মেক্সিকোর অন্যতম মাদকসম্রাট। তবে এর আগে বন্ধু সালভাদর গোমেজকে হত্যা করে ‘মাতা অ্যামিগোজ’ (বন্ধুর হত্যাকারী) হিসেবে পরিচিতি পান।
গাল্ফ কার্টেল ওসিয়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন টনকে টন কোকেন-মারিজুয়ানা পাচার করেন। এর মাধ্যমে তিনি গড়ে তোলেন বিশাল এক মাদকসাম্রাজ্য। পরবর্তীতে তা বিস্তৃত হয়েছিল দক্ষিণ টেক্সাসের রিও গ্র্যান্ডে উপত্যকা এবং অন্যান্য অঞ্চলে।
২০০১ সালের জুনে আটলান্টায় জব্দ হওয়া মাদক বলে দেয় যে, উপসাগরীয় ওই কার্টেল থেকে কেবল আটলান্টায় সাড়ে তিন মাসে ৪১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মাদক পাচার হয়েছিল। এখানেই থামেননি ওসিয়েল। মেক্সিকান সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন সদস্যদের নিয়ে গঠন করেন ‘দ্য জেডস’। এই বাহিনী তার দেহরক্ষীর কাজ করত। ২০০৩ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ২০০৭ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা হয়। ২০১০ সালে তাকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরবর্তীতে দ্য জেডস উপসাগরীয় কার্টেল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ইউএস জেল সার্ভিসের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, ‘শুক্রবারের শুরুতে কার্ডেনাসকে ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এর হেফাজতে’ ছেড়ে দেওয়া হয়।’তবে কার্ডেনাসকে মেক্সিকোতে নির্বাসিত করা হবে নাকি মার্কিন মাটিতে রাখা হবে তা স্পষ্ট নয়।আইসিই-এর একজন মুখপাত্র বলেছেন, এর এনফোর্সমেন্ট এবং রিমুভাল অপারেশন অফিসাররা ইন্ডিয়ানার টেরে হাউটের কারাগারে কার্ডেনাসকে হেফাজতে নিয়েছিল এবং তিনি একটি চূড়ান্ত স্বভাব নির্ধারণের জন্য মুলতুবি আইসিই হেফাজতে রয়েছেন।
মার্কিন এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে, ইউএস নিউজ নেটওয়ার্ক এনবিসি জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসন সোমবার কার্ডেনাসকে মেক্সিকোতে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করছে।মেক্সিকান সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশটিতে কার্ডেনাসকে নিয়ে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে এবং তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অভিবাসন আটক কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
লিও সিলভা, একজন প্রাক্তন মার্কিন ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এজেন্ট। যিনি মেক্সিকোতে জেটাসের বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন। তিনি বলেছেন, গত দুই দশকে মেক্সিকোতে ভয়াবহ সহিংসতার উত্থানের জন্য কার্ডেনাস সরাসরি দায়ী।কার্ডেনাস শুধুমাত্র মাদক পাচার নয়, তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকার বাসিন্দাদের এবং ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে। তারা মুক্তিপণের জন্য বিভিন্ন সময়ে অপহরণ করে সন্ত্রাসী কাজ চালিয়েছেন।