ফিলিস্তিনের সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।গতকাল বুধবার ইরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন হানিয়া।তিনজন ইরানি কর্মকর্তা ও ইরানের বিপ্লবী গার্ডের দুজন সদস্যের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, গতকাল বুধবার সকালে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে খামেনি ইসরায়েলে হামলার নির্দেশ দেন।
হানিয়ার গুপ্তহত্যার দায় ইসরায়েলের বলে দাবি করেছে ইরান ও হামাস। তবে এ নিয়ে তেল আবিবের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিদেশে শত্রুদের হত্যা করার জন্য কুখ্যাতি রয়েছে ইসরায়েলের। এর আগেও তারা অনেকবার এ ধরনের কাজ করেছে।
হানিয়া ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তেহরানে গিয়েছিলেন। সেখানে তাকে হত্যা করা হয়। প্রায় ১০ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধে ইরান শুরু থেকে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়িয়ে দেশটি মিত্র ও প্রক্সিবাহিনীদের দিয়ে ইসরায়েলকে চাপে রেখেছে।গত এপ্রিলে সিরিয়ায় এক ইরানি কমান্ডারকে হত্যার ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করে ইরান। এরপর দেশটি ইসরায়েল ভূখণ্ডে হামলা চালায়।
ইরানি কর্মকর্তারা জানান, ইরান কত জোরালো হামলা চালাবে তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। ইরানের সামরিক কমান্ডাররা তেল আবিব এবং হাইফার আশপাশে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বয়ে হামলার কথা বিবেচনা করছেন। তবে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা এড়ানোর জোর চেষ্টা করা হবে। ইরান এবং এর অন্যান্য ফ্রন্ট থেকে সমন্বিত আক্রমণের কথা বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইরাক থেকেও হামলা চালানো হতে পারে।
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘে ইরানের মিশনসহ অন্যান্য ইরানি কর্মকর্তারাও প্রকাশ্যে বলেছেন যে, সার্বভৌমত্ব রক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে। আর তাই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তারা প্রতিশোধ নেবে।ফিলিস্তিনের হামাস, লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুথি এবং ইরাকের একাধিক মিলিশিয়া বাহিনীকে সমর্থন করে ইরান। এই সংগঠনগুলোর নেতারা ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথে তেহরানে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে হানিয়াকে হত্যা করা হয়।