স্ত্রীকে হত্যা করেন স্বামী। অতঃপর ঘরে তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান। পরে তার কর্মস্থল সাদ টেক্সসটাইল কারখানার কর্মী আরিফকে ফোনে জানান, তালাবদ্ধ ঘরে স্ত্রীর লাশ রয়েছে। দেয়ালে ফোন নম্বর লেখা আছে। খবর দিয়ে যেন লাশ দিয়ে দেওয়া হয়।পরে দুপুরে বিষয়টি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই ঘরের তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে।
গতকাল বুধবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা উত্তর পারা গ্রামের মো. আ. ছমাতের ভাড়া বাড়ির তৃতীয় তলার একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।নিহত মীম আক্তার (২০) সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার ছোটবেড়াখারুয়া গ্রামের মো. ইউসুফ খানের মেয়ে।মীমের স্বামী মো. আল আমীন টাঙ্গাইলের কালিহাতি থানার কালাই গ্রামের মো.আমিরুল খানের ছেলে। তিনি ওই বাড়িতে ভাড়া থেকে সাদ টেক্সটাইলে চাকরি করতেন।
স্থানীয়রা জানান, আল আমীন তার স্ত্রী মীমকে নিয়ে ওই বাড়ির তৃতীয় তলার একটিকক্ষ ভাড়া থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে কোনো এক সময় আল আমীন তার স্ত্রীকে হত্যা করেন। পরে লাশের পাশে চিঠি লিখে রেখে যান। সকালে আল আমীন সহকর্মীকে জানালে হত্যার ঘটনা প্রকাশ পায়।
চিরকুটে আল আমিন লেখেন, ‘মা, আমারে মাফ কইরা দিও। অনেক স্বপ্ন ছিল তুমাকে কোনদিন কষ্ট দিব না। কিন্তু এমন একজন মানুষ আমারে আইনা দিছ, যার অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই সিদ্ধান্ত নিলাম। তিলে তিলে মরার চাইতে একেবারে মরে গেলাম। সবাই আমাকে মাফ কইরা দিও, সে আমাকে কয়েক মাসের মধ্যে মানসিক রোগী বানাইয়া ফালছে। নিজে একাই মইরা যাইতাম, কিন্তু এরে যদি বাঁচাইয়া রাইখা যাই, এ আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবো। তাই মাইরা ফেললাম।’
আরও লেখা ছিল—‘অনেক স্বপ্ন ছিল, রাসূলের সব সুন্নতগুলি আমার জীবনে বাস্তবায়িত করবো। কিন্তু পারলাম না। পরিশেষে সবার জন্য দোয়া করে গেলাম, এমন বউ যেন কারো কপালে না জোটে।’
আল আমিন লিখেছেন, ‘কাওসার ভাইদের দোকান থেকে ৫০০ টাকা নগদ দিয়া ৯০০ টাকা বাকি রাখিয়া চাউলের বস্তা আনছিলাম। রুম ভাড়া রুমের আসবাবপত্র বিক্রি করে দিয়া দিও।’শ্রীপুর থানার পরিদর্শক মো. মোহেল রানা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেক ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।