মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন ৪৫ বাংলাদেশি নাগরিক। আজ রবিবার সকালে কক্সবাজারের নুনিয়ারছরা বিআইডব্লিউটিএর ঘাটে বাংলাদেশী এসব নাগরিকদের হস্তান্তর করেন মিয়ানমারের বিজিপি প্রতিনিধি দল। এর আগেমিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে বাংলাদেশের জলসীমায় তাদের নিয়ে আসা হয়। পরে কোস্ট গার্ডের একটি জাহাজে করে সকাল ১০টার দিকে এসব বাংলাদেশী নাগরিকদের কক্সবাজারের নুনিয়ারছরা বিআইডব্লিউটিএর ঘাটে নিয়ে এসে তাদের হস্তান্তর করেন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশী নাগরিকদের হস্তান্তরের পর বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া ১৩৪ জন বিজিপি ও সেনা সদস্যদের হস্তান্তর করে বিজিবি কর্তৃপক্ষ। সকাল সোয়া ৭টায় মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের বিজিবির তত্ত্বাবধানে টেকনাফ থেকে নুনিয়ারছরা বিআইডব্লিউটিএর ঘাটে নিয়ে আসা হয়। এর পর মিয়ানমারের নৌবাহিনীর জাহাজ যোগে দুপুরে তারা ফেরত যাচ্ছেন নিজ দেশে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এডিএম মো ইয়ামিন হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।সকালে নুনিয়ারছরা বিআইডব্লিউটিএর ঘাটে মিয়ানমারের বিজিপি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে মিয়ানমার দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং বিজিবির রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মেহেদি হোসাইন কবির সহ বিজিবি কর্মকর্তা এবং কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন হস্তান্তর উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমারের উইংয়ের মহাপরিচালক মিয়া মো. মাঈনুল কবির জানিয়েছেন, মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ ইউএমএস চিন ডুইন রবিবার ভোরে মিয়ানমার থেকে ৪৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে কক্সবাজার সাগর উপকূলে পৌঁছান। শনিবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিতওয়ে থেকে জাহাজটি রওয়ানা দেয়। মিয়ানমারের কারাগারে কারাভোগ শেষে ৪৫ বাংলাদেশিকে ফেরত দিচ্ছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। এর বিনিময়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতে জের ধরে পালিয়ে আসা ১৩৪ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য ফেরত যাচ্ছে।
তিনি জানান, বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের বাহিনীর হাতে আটক হয়ে কারাভোগ শেষ করা ৪৫ বাংলাদেশি নাগরিক। ওখানে কক্সবাজার, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বাসিন্দা রয়েছে।মিয়ানমারের বাংলাদেশ দূতাবাস সুত্রে জানা যায়, ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সিত্তওয়েতে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের অবিচল প্রচেষ্টার ফলে, আরও একটি বাংলাদেশী নাগরিককে তাদের পরিবারের কাছে দেশে পাঠানো সম্ভব হয়েছে।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল মিয়ানমার থেকে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরে ছিলেন ১৭৩ জন বাংলাদেশি। একই সঙ্গে ওইদিন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ২৮৮ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনা সদস্যকে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ। এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৩৩০ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি, সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাকে স্বদেশে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।
এর পর গত ২৫ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত কয়েক দফায় আর ১৩৪ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। গত ১২ মে কক্সবাজার সফরে আসা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ জানিয়েছিলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসাদের মধ্যে কজন লে কর্ণেল ও ২ জন মেজরও রয়েছেন। যারা এতদিন বিজিবির হেফাজতে ছিলেন।