Skip to content

ব্রেইন অ্যানিউরিজমের লক্ষণ ও চিকিৎসা

    ব্রেইন অ্যানিউরিজমের লক্ষণ ও চিকিৎসা prothomasha.com

    ব্রেইন অ্যানিউরিজম এমন এক অবস্থা, যেখানে আপনার মস্তিষ্কের রক্তনালির যে বেলুনিং বা বুলিং (নধষষড়ড়হরহম ড়ৎ নঁষমরহম) রয়েছে, তা ফেটে গিয়ে মস্তিষ্কে হঠাৎ রক্তক্ষরণ হতে থাকে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এ সমস্যাটির নাম হেমোরজিক স্ট্রোক (যবসড়ৎৎযধমরপ ংঃৎড়শব)।ব্রেইন অ্যানিউরিজমের কারণ : বংশগত কারণে এ রোগ হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপও এ রোগ হওয়ার জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। এছাড়া মাথায় গুরুতর আঘাত পেলে এ রোগ হতে পারে। ধূমপানজনিত কারণেও ব্রেইন অ্যানিউরিজম হতে পারে।লক্ষণ : বেশিরভাগ মস্তিষ্কের অ্যানিউরিজমগুলো ফাটে না। ফলে লক্ষণগুলো বোঝা যায় না। তাই সহজেই লক্ষণগুলো শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়ে। এই বিঘ্নিত অ্যানিউরিজমগুলো অন্যান্য অবস্থার জন্য প্রায়ই পরীক্ষার সময় ধরা পড়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের অ্যানিউরিজমগুলো ফেটে গেলেই তার লক্ষণ প্রকাশ পায়। এর মধ্যে রয়েছেÑ হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, চোখের কাছে বা পেছনে ব্যথা, অস্পষ্ট দৃষ্টি বা দ্বিগুণ দৃষ্টি, মুখের একপাশ অবশ হওয়া বা অসাড়তা ইত্যাদি।মস্তিষ্কের অ্যানিউরিজমে সাবআরকনয়েড হেমোরেজ বা রক্তক্ষরণ হতে পারে। এ রোগীদের মধ্যে প্রতি ৫ জনের ৩ জন ২ সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যুবরণ করে।

    রোগ নির্ণয় : এনজিওগ্রাম হলো এ রোগ শনাক্তের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা। এটি রক্তনালিগুলোর দুর্বল দাগ চিত্রিত করে। চিকিৎসক রোগীর পায়ের রক্তনালির মাধ্যমে একটি ক্যাথেটার নামক নমনীয় ছোট নল প্রবেশ করিয়ে দেন। তিনি আপনার ঘাড়ের রক্তনালিগুলোয় মস্তিষ্ক পর্যন্ত প্রসারিত ক্যাথেটারকে গাইড করবেন। আপনার মস্তিষ্কের সব রক্তনালিগুলো দেখতে কনট্রাস্ট ডাই ইনজেকশন দেওয়ার পর তিনি এক্স-রে করে নেবেন। এটি চিকিৎসককে সহজেই মস্তিষ্ক অ্যানিউরিজমের অবস্থান নির্ণয় করতে সহায়তা করে। এছাড়া ব্রেইন অ্যানিউরিজম শনাক্তে এমআরআই, সিটিস্ক্যান, সিএসএফ পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।চিকিৎসা : মাথায় রক্তক্ষরণের বিপদ শুধু অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দূর করা সম্ভব। এর একটি পন্থা হলো, রোগীর কুঁচকি দিয়ে ক্যাথিটার ঢুকিয়ে মগজের সংশ্লিষ্ট ধমনি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। ওই ক্যাথিটার দিয়েই অ্যানিউরিজমে প্ল্যাটিনামের অতি সূক্ষ্ম প্যাঁচানো তার ঢোকানো হয়। এর ফলে ফোলা জায়গায় আর কোনো রক্ত ঢুকতে পারে না। অ্যানিউরিজমটি মস্তিষ্কের রক্তচলাচল থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ফলে তার ভেতরের রক্ত আর জমাট থাকে না। বরং তরল হয়ে আসে। অন্য উপায়টি হলো, সরাসরি মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার। তার জন্য প্রয়োজন হয়, সবচেয়ে কাছ দিয়ে অ্যানিউরিজম অবধি পৌঁছানো। অতি সাবধানে কাজটি করতে হয়। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অ্যানিউরিজমটায় টাইটানের তৈরি ক্লিপ লাগাতে হয়। চাপ বাঁধা জায়গার ঠিক নিচে ক্লিপ বসিয়ে ফোলা জায়গাটায় আর যাতে রক্ত না ঢোকে, তার ব্যবস্থা করা হয়।

    লেখক : অধ্যাপক, নিউরোসার্জারি বিভাগ

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

    চেম্বার : ল্যাবএইড লিমিটেড, ধানমন্ডি, ঢাকা

    ০১৭১১৩৫৪১২০