Skip to content

আংশিক বন্ড–সুবিধা চান আসবাব রপ্তানিকারকেরা 

    আংশিক বন্ড–সুবিধা চান আসবাব রপ্তানিকারকেরা prothomasha.com

    বাংলাদেশ থেকে করোনার মধ্যেও আসবাব রপ্তানি বেড়েছে। গত ২০২১–২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল ১১ কোটি মার্কিন ডলার। তারপর থেকে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতায় রপ্তানি কমেছে। রপ্তানি কমলেও এই খাতের রপ্তানিকারকেরা বলছেন, শতভাগ ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে হলেও আংশিক বন্ড–সুবিধায় কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দেওয়া হোক। সেটি হলে রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতাসক্ষমতা বাড়বে। তাতে রপ্তানিও বেড়ে যাবে। 

    আগামী ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে এ দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। এনবিআরকে দেওয়া আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবে সমিতির সভাপতি কে এম আকতারুজ্জামান বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে আংশিক বন্ড–সুবিধার দাবি করা হলেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। উল্টো কাঁচামাল আমদানির ওপর শুল্ক–কর বাড়ছে। চলতি বছর নগদ সহায়তা কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর প্রতিযোগিতাসক্ষমতা কমেছে। রপ্তানিও কমছে।আসবাব রপ্তানিকারক সমিতি বলছে, তারা যে দাবি করেছে, সেটি আমদানিনীতি আদেশ ২০২১–২৪, রপ্তানিনীতি ২০২১–২৪ এবং ট্যারিফ পলিসি ২০২৩–এ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এমনকি গত বছরের মার্চে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রপ্তানিসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির ১১তম সভায়ও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

    আসবাব খাতে আংশিক বন্ড–সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন পর্যায়ে নতুন করে শুল্ক–কর না বাড়ানো হলে আগামী তিন বছরে এ খাতে নতুন বিনিয়োগ হবে বলে দাবি করেছেন সমিতির নেতারা। তাঁরা বলছেন, ২৫টির মতো মাঝারি ও বড় বিনিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হতে পারে।সমিতি আরও বলেছে, বর্তমানে বাংলাদেশি আসবাবের সবচেয়ে বড় বাজার ভারত। তবে ভারত আসবাব খাতে ৪০ হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতাসক্ষমতা বাড়ানো না গেলে ভারতের বাজার হারানোর পাশাপাশি ভারতের আসবাব বাংলাদেশের বাজার দখলে নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

    বাংলাদেশের আসবাবের বাজার ৩০ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে ৬৭৪ কোটি টাকার আসবাব আমদানির মাধ্যমে পূরণ হচ্ছে। এমন তথ্য দিয়ে কে এম আকতারুজ্জামান বলেন, আংশিক বন্ড–সুবিধা পেলে তাতে আগামী তিন বছরে আসবাব রপ্তানি ১০০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। একই সঙ্গে আমদানিনির্ভরতাও কাটবে। 

    বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, আসবাবের বৈশ্বিক বাজার ৬৫ হাজার কোটি ডলারের। সরকার যথাযথ নীতিসহায়তা দিলে বাংলাদেশ থেকে আসবাব রপ্তানি খুব অল্প সময়ে ১০০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশ বর্তমানে ৩৮টি দেশে শুল্কমুক্ত–সুবিধা পায়। কিন্তু কাঁচামালের উচ্চ আমদানি শুল্কের কারণে দেশের আসবাবশিল্পের রপ্তানি সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না; বরং উচ্চ শুল্কের কারণে রপ্তানিবাজারের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ পিছিয়ে যাচ্ছে। 

    এদিকে বাংলাদেশ আসবাব শিল্প মালিক সমিতি আগামী বাজেটে আসবাব উৎপাদনে প্রয়োজনীয় ১০টি কাঁচামালের ওপর থেকে সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) প্রত্যাহারের দাবি করেছে। সমিতির সভাপতি সেলিম এইচ রহমান বলছেন, এসব কাঁচামাল দেশে উৎপাদিত না হওয়ায় আমদানি করতে হয়। এতে আসবাবের উৎপাদন ব্যয়ের পাশাপাশি বাজারমূল্যও বেড়ে যায়। ফলে দেশীয় আসবাব আমদানি করা আসবাবের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে।