Skip to content

প্রসঙ্গ কপিরাইট: জি-সিরিজের বিরুদ্ধে ‘শিরোনামহীন’র অভিযোগ

    প্রসঙ্গ কপিরাইট: জি-সিরিজের বিরুদ্ধে ‘শিরোনামহীন’র অভিযোগ prothomasha.com

    কপিরাইট ইস্যুতে ফের মুখোমুখি ব্যান্ড ‘শিরোনামহীন’ ও অডিও-ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জি-সিরিজ। এবার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ব্যান্ডটি। কারণ কপিরাইট অফিস থেকে সনদ পাওয়ার পরও এই ব্যান্ডের বেশ কিছু গান বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রচার করছে জি-সিরিজ। শুধু তাই নয়, বিপরীতে ‘শিরোনামহীন’র ইউটিউব চ্যানেলকেই দেওয়া হচ্ছে স্ট্রাইক!

    দুদকের কাছে দেওয়া ‘শিরোনামহীন’র অভিযোগপত্রের কপি এসেছে । সেখানে লেখা রয়েছে, “জি-সিরিজ নামে মিউজিক লেবেল প্রতিষ্ঠান ‘শিরোনামহীন’ ব্যান্ডের নিজস্ব ও কপিরাইটকৃত—বন্ধ জানালা, হাসিমুখ, জাহাজি, পাখি, ইচ্ছেঘুড়ি, ভালোবাসা মেঘ ও ক্যাফেটেরিয়া ইত্যাদি গান বিদেশি কিছু কোম্পানির কাছে বিক্রি করে অবৈধভাবে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। যেসব অর্থের বিপরীতে সরকারকে কোনও ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রদান করছে না। জি-সিরিজের এরকম বে-আইনি ও দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে গানগুলোর প্রকৃত স্রষ্টা ও মালিক ‘শিরোনামহীন’ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং বাংলাদেশের সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”

    বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুদকের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ব্যান্ডটির দলনেতা জিয়াউর রহমান জিয়া। একই প্রসঙ্গে  কথা হয় জিয়ার। তিনি বললেন, ‘আইন অনুযায়ী যে কোনও শিল্পের কপিরাইট থাকে এর প্রণেতা বা ক্রিয়েটরের। সে হিসেবে আমাদের গানগুলোর কপিরাইট সনদ অনেক আগেই পেয়েছি, সেটা ২০১৭ সালে। জি-সিরিজ থেকে আমাদের অ্যালবামগুলো চুক্তি অনুযায়ী ডিস্ট্রিবিউশন হয়েছিল। আইন অনুযায়ী সেটার সময়সীমা হয়েছে বিধায় জি-সিরিজের স্বত্ত্ব বাতিল করে আমাদের ব্যান্ডের নামে গানগুলোর স্বত্ত্ব দিয়েছিল কপিরাইট অফিস। এরপর তারা (জি-সিরিজ) আপিলও করেছিল। তবে চূড়ান্ত রায়ও আসে আমাদের অনুকূলে। কিন্তু যখনই আমরা ওই অ্যালবামগুলো (জাহাজী, ইচ্ছে ঘুড়ি, বন্ধ জানালা) ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করতে গিয়েছি, প্রতিবার জি-সিরিজের আক্রমণের (অন্তর্জাল) শিকার হয়েছি। তারা স্ট্রাইক দিচ্ছে, ডেক ডাউন নোটিশ দিচ্ছে, গ্লোবালি ব্লক করে রাখছে।

    জিয়া জানান, ২০১৯ সালে জি-সিরিজ বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছিল। তখন আদালত তাদের কাছে যথাযথ নথি-প্রমাণ চেয়েছিল। কিন্তু তারা সেটা এখনও দেয়নি। জিয়ার ভাষ্য, ‘এই কালক্ষেপণের উদ্দেশ্য হলো, বাণিজ্যিক মুনাফা অর্জন। তারা কখনও সুবিচার চায়নি, চাইবেও না। কারণ সুবিচার তাদের পক্ষে নয়, শিরোনামহীনের পক্ষেই যাবে।’ সবশেষে জিয়া মনে করেন, কপিরাইট অফিস থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না থাকার কারণেই এরকম অনিয়ম হচ্ছে। এজন্য এবার দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

    সেই অভিযোগের পর গত ২৬ মে কপিরাইট অফিস থেকে জি-সিরিজের স্বত্বাধিকারী নাজমুল ভূঁইয়ার কাছে একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যাতে আগামী ২ জুনের মধ্যে একটি লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে আপাতত কিছুই বলতে চাচ্ছেন না জি-সিরিজ কর্তৃপক্ষ। আইনজীবীর মাধ্যমে তারা বিষয়টি মোকাবিলা করবেন বলে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, দেশের ব্যান্ড মিউজিকের সফলতম দল ‘শিরোনামহীন’। ২০০৪ সালে প্রকাশ হয় তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘জাহাজী’। এরপর ‘ইচ্ছে ঘুড়ি’ ও ‘বন্ধ জানালা’ অ্যালবামগুলো আসে যথাক্রমে ২০০৬ ও ২০০৯ সালে। সবগুলো অ্যালবামই বাণিজ্যিকভাবে যেমন সফল ছিল, তেমনি এগুলোর গান পেয়েছে কালজয়ের খ্যাতি।