বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ‘অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন : প্রেক্ষিত পদ্মা ও তিস্তা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, গঙ্গা চুক্তি শেষ পর্যায়ে, তিস্তা চুক্তি অধরাই রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক নদীগুলো নিয়ে বাংলাদেশের দুঃখের শেষ হচ্ছে না। এর মধ্যে উত্তর বাংলায় মেরুকরণ ঘটছে। আর দক্ষিণ বাংলায় উঠে আসছে লবণাক্ততা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। তাই জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে অভিন্ন নদীর পানি সমস্যার সমাধান করতে হবে। গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন আন্তর্জাতিক নদীর পানির হিস্যা লাভের ন্যায্যতা নিয়ে মওলানা ভাসানীর ফারাক্কা মার্চের স্মৃতিচারণা করেন।
তিনি বলেন, সেদিন তাঁর ওই উদ্যোগ ও পরবর্তী সময়ে পশ্চিম বাংলার বামফ্রন্ট সরকার বিশেষ করে কমরেড জ্যোতি বসুর ভূমিকায় গঙ্গার পানি চুক্তি সম্পাদন সম্ভব হলেও গঙ্গা চুক্তিতে যেভাবে পানির কথা ভাবা হয়েছিল তা কখনো পাওয়া যায়নি। বরং ফারাক্কাসহ গঙ্গার উজানে পানি প্রত্যাহার করার ফলে বাংলাদেশের জন্য গঙ্গার পানিপ্রাপ্তি কার্যত অসম্ভব পর্যায়ে পৌঁছেছে। অন্যদিকে ভারতের আন্ত নদী সংযোগ পরিকল্পনা এই বিপদকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। গঙ্গা চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই পর্যালোচনার ভিত্তিতে ওই চুক্তির নবায়ণ করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিস্তা চুক্তি সম্পর্কে সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, সম্পাদিত হওয়ার আগেই তিস্তা ভূ-রাজনীতির দ্বৈরথের শিকারে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ তিস্তা চুক্তির জন্য অপেক্ষা করতে পারে না। তিস্তা চুক্তির পানি না দিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা ভারতের অর্থায়নের সাম্প্রতিক প্রস্তাব কার্যত ‘গরু মেরে জুতা দানের’ শামিল। তিনি আরো বলেন, কারো জন্য অপেক্ষা নয়, তিস্তার মানুষকে বাঁচাতে, উত্তর বাংলাকে বাঁচাতে, নিজস্ব অর্থায়নে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। তিস্তা পারের মানুষের অর্থ দিয়ে সেটা করা সম্ভব। এ জন্য তিস্তা কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করেন তিনি। আলোচনায় আরো অংশ নেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, পরিবেশবিদ মাহবুব সিদ্দিকি, নদী বিশেষজ্ঞ শেখ রোকন, তিস্তা বাঁচাও-নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী প্রমুখ।