পিরিয়ডের সময় প্রতিটি নারীর জন্য সবচেয়ে কঠিন দিনগুলোর মধ্যে একটি। এ সময় তারা বিভিন্ন ধরনের মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। এটি যদিও একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তবে কিছু অভ্যাস অস্বস্তিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং শরীরের হোমিওস্টেসিস বন্ধ করে দিতে পারে। তাই পিরিয়ডের সময় স্বস্তি পেতে নারীদের কিছু ভুল এড়িয়ে চলতে হবে। যে ভুলগুলো অনেকেই না জেনে করে থাকেন। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক পিরিয়ডের সময় যে ভুলগুলো করা যাবে না-
পানি কম পান করা
পিরিয়ডের সময় হাইড্রেটেড থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক নারীই এ সময় বারবার বাথরুমে যাওয়ার ভয়ে বা ভুল ধারণার কারণে কম পানি পান করে থাকেন। পর্যাপ্ত হাইড্রেশন সাধারণত পিরিয়ডের সময় পেট ফাঁপা, ক্র্যাম্প এবং মাথাব্যথা উপশম করে। শরীরে হাইড্রেশনের মাত্রা বজায় রাখতে পানীয় পানের পাশাপাশি পানি-সমৃদ্ধ খাবার খান।
রোজা রাখা বা দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষুধার্ত থাকা
এই দিনগুলোতে রক্তপাত আপনাকে দুর্বল করে তুলতে পারে। এই সময়ে রোজা রাখা বা দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষুধার্ত থাকা এড়িয়ে চলুন। ভিটামিন, খনিজ এবং ক্যালসিয়াম-সহ আপনার শরীরে সম্পূর্ণ পুষ্টি সরবরাহ করতে আপনার খাদ্যতালিকায় পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করুন । এই সময় খাবার ঠিকমতো না খেলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে।
দীর্ঘসময় ধরে একই ন্যাপকিন ব্যবহার করা
অনেকেই একটি ন্যাপকিন পুরোদিন ব্যবহার করেন, যা বিষাক্ত শক সিন্ড্রোমের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়াও যোনিতে চুলকানি এবং ব্যাকটেরিয়া বাড়তে পারে। তাই এই সমস্যা এড়াতে দিনে তিনবার ন্যাপকিন পরিবর্তন করুন।
ওয়াক্সিং
পিরিয়ডের সময় ওয়াক্সিং সংবেদনশীলতা এবং ব্যথার মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এসময় হরমোনের ওঠানামা ত্বককে আরও সংবেদনশীল করে তুলতে পারে, ওয়াক্সিং সেশনের সময় অস্বস্তি বাড়ায়। অস্বস্তি কমাতে এবং আরও ভালো ফল পেতে পিরিয়ডের আগে বা পরে এটি করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ঘন ঘন পেইনকিলার খাওয়া
পিরিয়ডের সময় ক্র্যাম্প নিয়ন্ত্রণে পেইনকিলারের ওপর নির্ভর করা স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। আইবুপ্রোফেনের মতো ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ (NSAIDs) এর অতিরিক্ত ব্যবহার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা এবং অন্যান্য জটিলতার কারণ হতে পারে। শুধুমাত্র ব্যথানাশক ওষুধের উপর নির্ভর না করে পিরিয়ডের অস্বস্তি কমাতে হিট থেরাপি, মৃদু ব্যায়াম বা ভেষজ প্রতিকারের মতো বিকল্প পদ্ধতিগুলো বেছে নিন।
দেরি করে ঘুমানো
অনিয়মিত ঘুমের কারণে পিরিয়ডের সময় হরমোনের ভারসাম্য ব্যহত করতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব ক্লান্তি, মেজাজের পরিবর্তন এবং ক্র্যাম্পকে তীব্র করতে পারে। তাই একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘুমের সময়সূচী মেনে চলুন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। এক্ষেত্রে আরামদায়ক বিছানা এবং শান্ত কক্ষ নির্বাচন করুন। এতে ঘুম ভালো হবে।
অতিরিক্ত চিনি এবং ক্যাফেইন খাওয়া
পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত চিনি ও ক্যাফেইন খেলে, পেটফাঁপা ও হরমোনের ওঠানামার মতো সমস্যা বাড়াতে পারে। যদিও পিরিয়ডের সময় এই ধরনের খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের সঙ্গে কোনোরকম আপস না করে তৃষ্ণা মেটাতে হবে। সেজন্য ভেষজ চা, ডার্ক চকোলেট এবং ফলের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন।