বাগেরহাটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক আইডি দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে ছয় যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত রবিউল শেখ স্বাধীনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দিনভর পুলিশের একাধিক দল বাগেরহাট ও পিরোজপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে এবং অপহৃত যুবককে উদ্ধার করে।
গ্রেপ্তার যুবকরা হলো— সৈয়দ আল হারুন (২০), মো. তানিম হোসেন (২৩), সুজন শেখ (২৫), মো. ডালিম ফরাজী (২০), মো. সুজন শেখ (২০) ও সেলিম ওরফে ছলিশ মীর (৫৫)। এদের বাড়ি বাগেরহাট ও পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামে।গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রাম থেকে রবিউল শেখ স্বাধীন নামে এক যুবককে মাইক্রোবাসে একদল অপহরণকারী তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা রবিউলের পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. রাসেলুর রহমান জানান, সম্প্রতি বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের রবিউল শেখ স্বাধীনের সঙ্গে শারমিন আক্তার শিলা নামের একটি ফেসবুক আইডি দিয়ে পরিচয় হয়। ফেসবুক আইডির মেসেজে (ক্ষুদেবার্তা) রবিউলকে শারমিন প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কয়েকদিন ধরে তাদের মেসেজে প্রেমের আলাপ চলতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় ওই আইডি দিয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে ‘শারমিনের জন্মদিন, রবিউল তুমি তোমার বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াও’ এই কথা রবিউলকে মেসেজে লিখে জানায় ওই অপহরণকারী দল। রবিউল মেসেজ পেয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় দাঁড়ানোর কিছুক্ষণ পরেই একটি মাইক্রোবাস এসে রবিউলকে তুলে নেয়। এরপর রশি দিয়ে তার দুই হাত–পা বেঁধে ফেলে পাশের গোপালগঞ্জে নিয়ে যায়।
সেখানে গিয়ে রবিউলের কাছে থাকা মুঠোফোনে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এই টাকা না দিলে তাদের সন্তানকে হত্যা করার হুমকি দেয় ওই অপহরণকারী দল। রবিউলের পরিবার তাদের মুক্তিপণ না দিয়ে পুলিশে অভিযোগ করলে পুলিশ তৎপর হয়ে অভিযান শুরু করে।
মোবাইলে ট্রাকিং করে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শৈলদাহ গুচ্ছগ্রাম থেকে প্রথমে অপহৃত রবিউলকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তারা এই অপহরণ চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তাদের থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।