চিলির মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানলে মৃতের সংখ্যা ১১২ জনে দাঁড়িয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক। চিলির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পর্যটন নগরী ভালপারাইসোতে চলছে প্রচণ্ড দাবদাহ। উদ্ধারকর্মীরা এখনও বিভন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া আগুনে নিহতদের মৃতদেহ উদ্ধারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি চলছে আক্রান্তদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ। খবর এএফপির।
চিলির সমুদ্রতীরবর্তী শহর ভিনা দেল মারের একজন বাসিন্দা রোসানা আভেনদানো দাবানলের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেন, ‘এটা ছিল ভয়ানক, কেননা আমি আমার বাড়িতে যেতে পারছিলাম না। আগুন আমাদের বাসা গ্রাস করল..আমরা সব কিছু হারালাম। আমার স্বামী মাটিতে শুয়ে তাপ অনুভব করছিল। যখন আগুন কাছে চলে এলো সে দৌড়ে পালায়।’ ভিনা দেল মার বোটানিকেল গার্ডেনের পাশে থাকা এক বাসিন্দা লিলিয়ান রোজাস বলেন, ‘একটি বাড়িও এই এলাকায় অক্ষত নেই।’
এদিকে চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক তার দেশের ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইতোমধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। গতকাল রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) তিনি হেলিকপ্টারে করে উপদ্রুত এলাকা সফর করেছেন। দেশটির সরকারি হিসাবে রোববার পর্যন্ত ২৬ হাজার হেক্টর জমিতে থাকা বাড়িঘর, ফসলের ক্ষেতসহ গাছপালা পুড়ে গেছে। দাবানল ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কাজ করছে ৩১টি হেলিকপ্টার ও প্লেন। এক হাজার ৪০০ অগ্নিনির্বাপন কর্মী ও এক হাজার ৩০০ সেনাসদস্য কাজ করছে আগুন নেভাতে।
ইতোমধ্যে রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে ভালপারাইসো শহরের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে জারি করা হয়েছে কারফিউ। চিলির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যারোলিনা তোহা দাবানলের এই ঘটনাকে সন্দেহাতীতভাবে দেশটির আগুনের সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেছেন।খরা আর গ্রীষ্মকালীন দাবদাহের কারণেই এই দাবানলের উৎপত্তি যার প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণ অংশে। বিজ্ঞানীরা বলছেন এটা এল নিনো আবহাওয়ার লক্ষণ। শুধু চিলিই নয় কলম্বিয়াও প্রচণ্ড দাবদাহে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এই দাবদাহ ছড়িয়ে পড়বে প্যারাগুয়ে ও ব্রাজিলে। ইতোমধ্যে আর্জেন্টিনায়ও আগুনে পুড়ে গেছে ন্যাশনাল পার্কের তিন হাজার হেক্টর জমি।