প্রার্থনা ফারদিন দীঘি ‘চাচ্চু’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করে প্রথম আলোচনায় আসেন। ২০০৬ সালে সিনেমাটি মুক্তি পায়। সেই সিনেমায় শাকিবের নায়িকা ছিলেন অপু বিশ্বাস। ‘চাচ্চু’ সিনেমার সেই ‘জুঁই’ এখন বড় হয়েছেন। অভিনয় করছেন নায়িকা চরিত্রে। বড় পর্দায় প্রথমবার মুখোমুখি হচ্ছেন অপু বিশ্বাসের। অপু অভিনীত ‘ছায়াবৃক্ষ’ ও দীঘি অভিনীত চলচ্চিত্র ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ মুক্তি পাচ্ছে আজ।
নানা বাধা পেরিয়ে
নিরব ও অপু বিশ্বাস অভিনীত ‘ছায়াবৃক্ষ’ সিনেমার শুটিং থেকেই জটিলতা ছিল। বারবার পেছাতে থাকে শুটিং। পরবর্তী সময়ে শুরু হওয়ার পরেও নানা দুর্ঘটনায় আটকে যায় কাজ। এর মধ্যেই ২০২০ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার কোদালা চা-বাগানে শুটিং শেষ হয়। শিডিউল ও লোকেশন জটিলতা সিনেমাটির শুটিংয়ে দেরি হলেও তড়িঘড়ি করে পোস্টপ্রোডাকশনের কাজ শেষ হয়। পরে গত বছর ঈদে মুক্তি দেওয়ার কথা থাকলেও অনুদানের এ সিনেমার মুক্তি পিছিয়ে যেতে থাকে। অবশেষে নানা বাধা পেরিয়ে দর্শকদের সামনে আসছে সিনেমাটি। এটি পরিচালনা করেছেন বন্ধন বিশ্বাস। বন্ধন জানান, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ২৩টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। তিনি আশাবাদী যে সিনেমাটি দর্শক গ্রহণ করবে। বন্ধন বলেন, ‘আমার সিনেমায় চা-শ্রমিকদের যে গল্প তুলে ধরেছি, সেখানে কোনো ছাড় দিইনি।
পুরো একটিবিনোদনমূলক প্যাকেজ। দেশের প্রেক্ষাপটে চা-শ্রমিকদের নিয়ে তেমন সিনেমা নেই। দর্শকেরা লোকেশন বৈচিত্র্য, মৌলিক গল্প, তারকা—সবই আছে সিনেমাটিতে। শেষ পর্যন্ত ছবিটি দর্শককে ভাবাবে।’দর্শকদের সিনেমাটি কতটা ভাবাবে, সেটা আজই জানা যাবে। তার আগে অবশ্য পরিচালক নিজেই সিনেমার প্রচার নিয়ে ভাবনায় রয়েছেন। কারণ, প্রচারে তারকাদের কাউকেই সেই অর্থে পাননি। বন্ধন বলেন, ‘প্রচার নিয়ে খুশি না। নিরব ভাইয়ের শুটিংয়ের শিডিউল পড়ে গেছে। দিদি (অপু বিশ্বাস) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেলেন। নওশাবা ও অন্যরা ছিল কিন্তু অন্যদের শিডিউলের কারণে প্রচারে এগোতে পারলাম না।’সিনেমাটি দিয়ে ১৪ বছর পরে অপুর সঙ্গে পর্দায় আসছেন চিত্রনায়ক নিরব। তিনি বলেন, ‘গল্পটি নিয়ে আশাবাদী। সিনেমায় চা-শ্রমিকদের প্রত্যাশার গল্প উঠে এসেছে। সব মিলিয়ে এটি একটি মানবিক গল্প।’ সবশেষে এই অভিনেতা জানান, ইচ্ছা থাকলেও শুটিংয়ের জন্য প্রচারণায় থাকতে পারেননি।
রোমান্টিক গল্পে নূর ও দীঘি
‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ সিনেমায় উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রে বড় হওয়া নাবিল ও মৌয়ের গল্প। নাবিল দেশে এসে মৌয়ের প্রেমে পড়ে। অন্যদিকে তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সহজ–সরল পরোপকারী ছেলে শুভ। তাদের ভালোবাসার গল্প নিয়েই এগিয়ে যেতে থাকে সিনেমা। ইমদাদুল হক মিলনের একই নামের উপন্যাস থেকে নেওয়া গল্পে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি। ২০২০-২১ সালে এটি অনুদান পায়। এতে জুটি বেঁধেছেন গাজী আবদুন নূর ও দীঘি। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন আবদুস সামাদ। পরিচালক জানান, সিনেমাটি দেশের ২৩টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। উপন্যাস হাতে পেয়ে মৌয়ের চরিত্রটি কঠিন মনে হয় দীঘির কাছে। প্রথম দিকে চরিত্রটি নিয়ে দোটানায় ছিলেন। পরে পরিচালকের সহযোগিতায় সিনেমায় অভিনয় করেন। দীঘি বলেন, ‘আমি চরিত্রটি নিয়ে খুশি। দর্শক সিনেমাটি পছন্দ করবেন আশা করি। মৌ নামের ভিন্ন একটি মেয়ের গল্প। যার প্রেমে পড়বেন দর্শক।’
সিনেমা নিয়ে প্রথমবার অপু বিশ্বাসের মুখোমুখি হচ্ছেন—এমন প্রশ্নে দীঘি বলেন, ‘একসময় অপুদির সঙ্গে আমার অনেক সিনেমা রিলিজ হয়েছে। সেখানে আমি থাকতাম শিশু চরিত্রে। অপুদি নায়িকা। এবার আমাদের দুজনের সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। বেশ একটা রোমাঞ্চ কাজ করছে। অপুদির সিনেমাটিই দর্শক আগে দেখুক, পরে আমারটা দেখুক।’
এদিকে সিনেমাটির পোস্টার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনাও হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে চান না পরিচালক আবদুস সামাদ। তিনি বলেন, ‘সিনেমাটি হলে এসে দেখুন। আমি বিভিন্ন সিনেমা হলে থাকব। সিনেমাটি নিয়ে আগ্রহী ব্যক্তিরা আমার সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’
সিনেমাটির প্রধান চরিত্রের অভিনেতা গাজী আবদুন নূর রয়েছেন দেশের বাইরে। যে কারণে নিয়মিত প্রচারেও থাকতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘তাঁরা তাঁদের মতো চেষ্টা করেছেন। আমি একটু কাজে দেশের বাইরে। শেষ মুহূর্তে প্রচারে থাকতে পারিনি। আশা করব দর্শক সিনেমাটি ভালো ভাবে নেবেন।’