Skip to content

স্নাতকের আগেই চাকরির দুয়ার

    স্নাতকের আগেই চাকরির দুয়ার prothomasha.com

    কেমন হয়- যদি পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের হাতখরচের টাকাটা নিজেই জোগাড় করা যায়! শুধু হাতখরচই কেন- এমন অনেক প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ রয়েছে যেগুলোতে যুক্ত হয়ে মোটামুটি অনেক টাকা আয় করার সুযোগ রয়েছে। বলছি, স্নাতক শেষ হওয়ার আগেই খ-কালীন বা পার্টটাইম চাকরি সুবিধার কথা।পশ্চিমের দেশগুলোতে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে লেখাপড়ার পাশাপাশি তরুণদের হরহামেশাই পার্টটাইম চাকরি করতে দেখা যায়। বর্তমানে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের মাঝেও লেখাপড়ার পাশাপাশি পার্টটাইম ও ফুলটাইম চাকরি করার প্রবণতা বাড়ছে। নিজের হাত খরচ ও পরিবারে আর্থিক অবদান রাখার আকাক্সক্ষা থেকে স্নাতক পাস করার আগেই বিভিন্ন চাকরির দিকে ঝুঁকছে তরুণরা। পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করে একজন শিক্ষার্থী মাসে ৮০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা বা তার বেশিও উপার্জন করতে পারে।তবে এর সুফল আর্থিক উপার্জনের চেয়েও অনেক বেশি। কারণ পার্টটাইম ও ফুলটাইম চাকরি তরুণদের শৃঙ্খলা, সময় ব্যবস্থাপনা, কর্মক্ষেত্রের নিয়ম-কানুন মেনে চলা এবং কোনো দলের অংশ হিসেবে সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করার সক্ষমতা প্রভৃতি অপরিহার্য জীবন দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করে।এছাড়া, এটি শিক্ষার্থীদের বাস্তব-পৃথিবীর কাজের সংস্কৃতি এবং তাদের কাছে পেশাদারদের প্রত্যাশা এবং গতিশীলতা শিক্ষা দেয়। এই বাস্তব অভিজ্ঞতা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক থেকে পেশাদার পরিবেশে রূপান্তরিত হওয়া সহজতর করে। ছাত্রজীবনে চাকরি পাওয়া আপনার সামনে অনেক সুযোগ এনে দেবে। যেমন: স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে আপনার নেটওয়ার্ক বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকা উপার্জনের সুযোগ পাবেন।এজন্য আপনারা বিডি জবসের মতো অনলাইন চাকরির পোর্টালগুলো দেখতে পারেন। এছাড়াও, সোশ্যাল মিডিয়া; বিশেষ করে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। তবে সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে নেটওয়ার্কিং। এখানে কিছু চাকরির কথা বলা হলো, যেগুলো একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আপনার জানা উচিত:কল সেন্টারে এক্সিকিউটিভ পদে
    একজন শিক্ষার্থীর জন্য কল সেন্টার এক্সিকিউটিভ তথা নির্বাহীর চাকরিটি খুব আকর্ষণীয়। কারণ এর নমনীয় সময়সূচি তাদের কাজ ও পড়াশোনার ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক। সাধারণত, এই কাজের মূল দায়িত্বগুলো হলো : অনলাইনে গ্রাহকের কথা শুনে সে অনুযায়ী সঠিক সেবা নিশ্চিত করা, ইনকামিং ও আউটগোয়িং কল ব্যবস্থাপনা, গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া এবং তাদের প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করা। শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ দেয় এমন দুটি প্রতিষ্ঠান হলো : জেনেক্স ইনফোসিস ও হ্যালো ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেশন।দীর্ঘদিন ধরে কল সেন্টারে কাজ করা মোকাররম হোসেন বলেন, একজন কল সেন্টারের নির্বাহী দিনে ১০০ থেকে ১৫০ জনের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে এই ক্রমাগত মিথস্ক্রিয়া মানুষের আচরণ বোঝার ক্ষেত্রে একটি অনন্য দক্ষতা গড়ে তোলো, যা শুধু পাঠ্যপুস্তক পড়ে শেখা যায় না। তিনি আরও বলেন, ‘এক্ষেত্রে বেতন ৬০০০ থেকে ৮০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে, কারও ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকলে সে ১৫০০০ টাকা বা তার বেশিও আয় করতে পারে।’ সেলস এক্সিকিউটিভ বা বিক্রয় নির্বাহী পদেবর্তমানে আমাদের দেশে অনেক বিশ্বমানের ব্র্যান্ডের অফিসিয়াল আউটলেট রয়েছে। এসব জায়গায় বিক্রয় নির্বাহী হিসেবে কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এই চাকরির জন্য খুব বেশি যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। এইচএসসি পাস করার পর অনার্সে পড়া অবস্থায় যে কেউ সহজেই এই চাকরির আবেদন করতে পারে। গ্রাফিক্স ডিজাইনারবর্তমানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে তাদের উপস্থিতি বজায় রাখতে বাধ্য। মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো ভিজ্যুয়াল আবেদন তৈরি (ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে), আর এখানেই গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের কাজ। অনলাইন বা স্থানীয় প্রতিষ্ঠান থেকে বেসিক সার্টিফিকেট থাকলে যে কেউ এই চাকরির আবেদন করতে পারে। মৌসুমি মেলায় চাকরিবিভিন্ন মেলার সময় স্টলে পার্টটাইম চাকরির সুযোগ পায় শিক্ষার্থীরা। যেমন: জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা বা ফেব্রুয়ারিতে একুশে বইমেলা। এসব মেলায় পার্টটাইম বা ফুলটাইম চাকরির সুযোগ পাওয়া যায়। এসব চাকরি শিক্ষার্থীদের বাড়তি আয়ের পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনে সাহায্য করে। রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আহসান সোহেল একুশে বইমেলায় একটি বইয়ের দোকানে চাকরি করেছেন। স্টুডেন্ট কনসালট্যান্ট বা শিক্ষা পরামর্শকসাম্প্রতিক অতীতে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আবেদনকারীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা পরামর্শক ব্যবসায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এই পেশাকে কেন্দ্র করে অনেক ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ধরনের পার্টটাইম চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করেছে। এখানে যে কেউ স্টুডেন্ট কনসালট্যান্ট বা শিক্ষা পরামর্শক হিসেবে কাজ করতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া মডারেটরই-কমার্স ব্যবসা সাম্প্রতিক অতীতে অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে। বেশিরভাগ ছোট ব্যবসা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের অনলাইন উপস্থিতি প্রতিষ্ঠা করেছে। আর এতে সোশ্যাল মিডিয়া মডারেটর বা ম্যানেজার হিসেবে তরুণদের জন্য চাকরির নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। রিজারভেশন ও টিকিটিংআমাদের দেশে অনেক ট্রাভেল এজেন্সি আছে যারা রিজারভেশন ও টিকিটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে ফুলটাইম ও পার্টটাইম চাকরির সুযোগ দিচ্ছে। এই কাজের মধ্যে রয়েছে রিজারভেশন প্রক্রিয়া পরিচালনা ও তদারকি করা এবং এয়ারলাইন্সের টিকিটিং কার্যক্রম, দক্ষ ও নির্ভুল বুকিং, ইস্যু করা এবং গ্রাহক পরিষেবা নিশ্চিত করা।
    ফ্রন্ট ডেস্ক এক্সিকিউটিভ বা রিসেপশনিস্টএকজন রিসেপশনিস্টের কাজের মধ্যে রয়েছে : ফ্রন্ট-ডেস্কের কার্যক্রম পরিচালনা, অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানো ও সাহায্য করা, ফোনের উত্তর দেওয়া এবং একটি প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিনের কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে চালনার জন্য প্রশাসনিক কাজ সম্পন্ন করা।