নানা কারণে সমুদ্রে পারদের মাত্রা বাড়ছে। পারদের মাত্রা বাড়ায় নতুন সংকটের কথা জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গবেষকেরা সমুদ্রে পারদের মাত্রা নিয়ে পরীক্ষা করছেন। তাঁদের গবেষণায় বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে পারদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা স্টেলার সি লায়নের মতো সামুদ্রিক সিংহশাবকের মধ্যে বেশি পারদের মাত্রা খেয়াল করেছেন। পারদের মাত্রা বাড়ার কারণে বিভিন্ন বিপন্ন প্রজাতির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার আলেউটিয়ান দ্বীপপুঞ্জের স্টেলার সামুদ্রিক সিংহের মধ্যে পারদের উপস্থিতি নিয়ে এক দশক ধরে গবেষণা চলছে। আলেউটিয়ান রাশিয়া ও আলাস্কার মধ্যে বিস্তৃত দ্বীপ।
এ অঞ্চলে জন্ম নেওয়া প্রাণীর রক্ত ও লোমে ২০১১ থেকে ২০১৮ সময়ের চেয়ে ২০১৯ সালে পারদের মাত্রা প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারী ধাতু পারদ উচ্চ ঘনত্বের কারণে মানুষসহ প্রাণীর জন্য বিষাক্ত হতে পারে। শিল্প খাতের বহুমাত্রিক ব্যবহারের কারণে পরিবেশে পারদের উপস্থিতি বাড়ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণেও পারদের মাত্রা বাড়ছে। ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির কারণে সমুদ্রের পানিতে পারদের উপস্থিতি বাড়ছে। বিজ্ঞানী টড ও’হারা বলেন, ‘আমরা সমুদ্রে পারদের মাত্রা নিরাপদ কি না, তা নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করেছি। সমুদ্রে এখন যে পারদের মাত্রা, তা আমাদের জন্য এখনো তেমন হুমকির নয়। আমরা এখন যে মাছ খাই, তার মধ্যে পারদ ও অন্যান্য উপাদান সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে পরিবর্তিত হতে পারে। এভাবে সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে সামুদ্রিক প্রাণীর জীবনে হুমকি তৈরি হবে।’
১৯৯০–এর দশক থেকে বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় স্টেলার সি লায়নের নাম আছে। দক্ষিণ-পূর্ব আলাস্কায় পারদের মাত্রা উদ্বেগজনক বলা যায়। ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কসের বিজ্ঞানী লরি রিয়া বলেন, এ এলাকার পারদের ঘনত্ব অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে তিন থেকে চার গুণ বেশি৷ এসব প্রাণীর শাবকে পারদের উচ্চমাত্রা ও তাদের মা সি লায়নের খাবারে নির্দিষ্ট ধরনের মাছের সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে। ভ্রূণে পারদ স্থানান্তর হয় বলে এসব শাবকের শরীরে পারদের মাত্রা বেশি দেখা যায়। পারদের মাত্রা বাড়লে টিস্যুর ভাঙন দেখা যায়। এসব প্রাণী দীর্ঘ সময় ধরে শ্বাস রাখার জন্য প্রচুর অক্সিজেন ব্যবহার করে। পারদের মাত্রা বাড়লে এসব প্রাণীর শ্বসনপ্রক্রিয়ায় সংকট দেখা যায়।