ঘড়ির কাটায় রাত ১২টা। থানা চত্বরে বেশ কিছু যুবকের আনাগোনা। কাছে গিয়ে জানা গেল, তারা আক্রমণ করতে নয় বরং থানা পাহারা দিতে অতন্ত প্রহরির মতো কাজ করছেন তারা।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে থানা চত্বরে সংঘাত এড়াতে বাংলাদেশ ছাত্র শিবির ও জামায়াতের বেশ কিছু যুবক পাহারা দিচ্ছেন। শুধু থানা চত্বরে নয় উপজেলার সংখ্যালঘু হিন্দুদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় জামায়াতের নবাবগঞ্জ উপজেলা শাখার যুব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেলিম রানার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা গত ৫ আগষ্ট থেকে নবাবগঞ্জ থানায় অবস্থান করছি। থানা চত্বরের কোনো ক্ষতি হতে দিব না। একদল দুর্বৃত্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি সম্পদসহ থানা চত্বরে হামলা চালাচ্ছে। এতে করে আমাদের সম্পদ আমরাই নষ্ট করছি। দেশের সম্পদ রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। নিজ দায়িত্ব থেকেই এই কাজ করছি।’তর্পন ঘাট এলাকার রতন চন্দ্র রায় নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘শীতার কোড এলাকার দাদুরি গ্রামে প্রায় ১১০ হিন্দু পরিবারের বসবাস। গতরাতে ওই গ্রামে কে বা কাহারা তাদের মন্দিরে, বাড়িতে আক্রমণ করবে এমন খবরে আতঙ্কিত হই। পরে জামায়াতের সেলিম রানার সঙ্গে যোগাযোগ করে জামায়াত ও শিবিরের ৩০-৩৫ জন সেখানে গিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। পরে গ্রামবাসীরা নির্ভয়ে রাতে ঘুমাতে পেরেছে। আমরা তাদের কর্মকাণ্ডে অনেক খুশি।’নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাওহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে দেশের বিভিন্ন থানা চত্বরে আগুন ও ভাঙচুর চালায় এক দল দুর্বৃত্ত। এখানে তিনদিন ধরে জামায়াত ও শিবিরের ৩০-৩৫ জন যুবকের একটি দল পাহারা দিচ্ছেন। এতে থানা চত্বরে কোনো ক্ষতি হয়নি। আমিসহ আমার সহকর্মীরা অনেক খুশি।’