শেরপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান শেরপুর প্রেসক্লাবের নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ থাকা সত্বেও তা বিলুপ্তি ও পাল্টা কমিটি ঘোষণার ঘটনায় দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। ১৪ মে মঙ্গলবার প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার ও সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল যৌথভাবে বাদী হয়ে শেরপুরের সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ঘোষণাসূচক ওই মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মো. মুসলিম উদ্দিন তা আমলে নিয়ে বিবাদী সাংবাদিক দেবাশীষ ভট্টাচার্য ও মেরাজ উদ্দিনের প্রতি ২৯ মে’র মধ্যে কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল বলেন, আমরা পেশীশক্তিতে বিশ্বাসী নই। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। অধিকার ও প্রতিষ্ঠানের প্রবিধান লঙ্ঘন করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারার কারণে আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আইনগতভাবেই তা মোকাবেলা করব। মামলায় বলা হয়, গত বছরের ২৭ জুন শেরপুর প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বাদী রফিকুল ইসলাম আধার ও সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জলকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এরপর বিদায়ী কমিটি বিলম্বে দায়িত্ব হস্তান্তর করায় একই বছরের ১৩ অক্টোবর নির্বাহী পরিষদের সভা করা হয়। প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাহী পরিষদের প্রথম সভা থেকে ২ বছর ওই কমিটির মেয়াদকাল।
কিন্তু গঠনতন্ত্রের প্রবিধান লঙ্ঘন করে গত ২৪ এপ্রিল এক মতবিনিময় সভার নামে প্রায় দেড় বছর মেয়াদ থাকা কমিটি বিলুপ্তি ও বিবাদীদ্বয়কে পরবর্তী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মামলায় আরও বলা হয়, প্রেসক্লাবের সভাপতি পদে স্থায়ী সদস্যপদ প্রাপ্তির ১০ বছর পূর্ণ করার বিধান থাকলেও বিবাদী দেবাশীষ ভট্টাচার্য প্রেসক্লাবের কোন সদস্যই নন। এছাড়া সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধারে দু’দফায় থাকার পর পরবর্তী মেয়াদে একই পদে থাকার বিধান না থাকলেও বিবাদী মেরাজ উদ্দিন পূর্ববর্তী টানা দুই মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সঙ্গত কারণে তারও থাকার সুযোগ নেই।
ওই অবস্থায় বাদীপক্ষ তাদের নির্বাচিত কমিটিকে বৈধ এবং বিবাদীদ্বয়ের কমিটিকে অবৈধ ঘোষণার দাবিতে ওই মামলা দায়ের করা হয়। সেইসাথে বিবাদীপক্ষ যেন প্রেসক্লাবের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা, প্রেসক্লাবের লোগোসহ দুটি অফিস ব্যবহার, মার্কেটের ভাড়া আদায়, ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনাসহ কোন প্রকার কর্মকাণ্ড পরিচালনা না করতে পারে সেজন্য মূল মোকদ্দমা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিবাদীদ্বয়ের বিরুদ্ধে অস্থায়ী ও অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়। দীর্ঘ শুনানী অন্তে বিচারক মূল মামলাটি গ্রহণ করে বিবাদীদ্বয়ের প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিশ জারির আদেশ দেন।
বাদীপক্ষে মামলাটি শুনানীকালে সিনিয়র আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোখলেছুর রহমান আকন্দ, মো. নুরুল ইসলাম, ও নুরুল ইসলাম তালুকদারসহ একঝাঁক আইনজীবী অংশ নেন। ওইসময় প্রেসক্লাব সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার ও সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল উপস্থিত ছিলেন।