সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরও দুইটি হত্যা মামলা হয়েছে।যার মধ্যে রাজধানীর মিরপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে লিটন হাসান লালু ওরফে হাসান গুলিতে নিহত হওয়ার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৪৮ জন আসামি।
আজ সোমবার নিহত হাসানের ভাই মিলন এ মামলা দায়ের করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী ইলতুৎমিশ সওদাগর এ্যানী মামলার বিষয় নিশ্চিত করেন।
এ মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান (নিখিল), ইলিয়াস মোল্লা, কামাল আহমেদ মজুমদার, আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিআইজি হারুন-অর-রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব এস এম মান্নান (কচি)।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, দেশে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলাকালে হাসান ৪ আগস্ট মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। দুপুর ২টার দিকে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন-অর-রশীদ, আসাদণজ্জামান খান কামাল, বিপ্লব কুমার ও হাবিবুর রহমানের নির্দেশে অন্যান্য আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ২০০/৩০০ জন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি বর্ষণ করে। অজ্ঞাত আসামির ছোঁড়া বুলেটে হাসান গুলিবিদ্ধ হয়। আগারগাঁও নিউরো সাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট হাসান মারা যান।
অপর মামলায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত কাঠমিস্ত্রী তারিক (১৮) নিহত হওয়ার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩ জন আসামি।আজ সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা নিহতের মা ফিদুশী খাতুন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দা বাদীনির জবানবন্দী গ্রহণ করে আদেশ অপেক্ষ্যমান রেখেছেন। বাদিপক্ষের আইনজীবী লিটন মিয়া মামলার আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাসান মাহমুদ, তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব সরকার ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট বিকালে শেরেবাংলা নগর থানার সামনে রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন তারিক। তার পেটে, হাতে ৪টি গুলি লাগে। গুলি লাগার পর সে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে দ্রুত পার্শ্ববর্তী শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৭ আগস্ট তিনি মারা যান।