ম্যাচের ২৮ মিনিট পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটে দুই লেগ মিলিয়ে পিএসজির বিপক্ষে বার্সেলোনা তখন এগিয়ে ৪–২ গোলে। আক্রমণ–প্রতি আক্রমণে খেলা জমে উঠলেও ম্যাচটা তখনো ছিল বার্সার নিয়ন্ত্রণেই। কিন্তু এরপরই হঠাৎ ছন্দ পতন। বক্সের ঠিক বাইরে গোল করার মতো পজিশনে থাকা পিএজি ফরোয়ার্ড ব্র্যাডলি বারকোলাকে পেছন থেকে ফাউল করেন বার্সার রোনাল্দ আরাউহো।
এই ফাউলের পর আরাউহোকে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি। কিছু সময় ধরে বিতণ্ডার পর শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়তে হয় বার্সা ডিফেন্ডারকে। রেফারির এ সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি বার্সা কোচ জাভি হার্নান্দেজও। ম্যাচ শেষে এ ঘটনাকেই নিজেদের হারের জন্য দায়ী করেছেন বার্সা কোচ।ঘরের মাঠে আকস্মিকভাবে ১০ জনে পরিণত হলেও ম্যাচে কিন্তু ১–০ গোলে এগিয়েই ছিল বার্সা। এরপর দ্রুত একাদশে পরিবর্তনও আনেন কোচ জাভি। লামিনে ইয়ামালকে তুলে নিয়ে নামান ইনিগো মার্তিনেজকে। এরপরও অবশ্য একজন খেলোয়াড় কমে যাওয়ার চাপ থেকে বেরোতে পারেনি কাতালান ক্লাবটি।
৪০ মিনিটে উসমান দেম্বেলের গোলে সমতায় ফেরে পিএসজি। আর বিরতির পর বার্সার মাঠে ২–১ গোলে লিড নেওয়ার পাশাপাশি পিএসজিকে দুই লেগ মিলিয়ে ৪–৪ সমতায় ফেরান ভিতিনিয়া। এরপর এমবাপ্পের জোড়া গোলে পিএসজি ম্যাচ জেতে ৪–১ গোলে (দুই লেগ মিলিয়ে ৬–৪ গোলে)। আর এই হারের পথে রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে লাল কার্ড দেখতে হয় বার্সা কোচ জাভি ও গোলরক্ষক কোচ দে লা ফুয়েন্তেকেও।
ম্যাচ শেষেও রেফারির ওপর নিজের রাগ গোপন করতে পারেননি জাভি। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায়ের জন্য রেফারির দিকে আঙুল তুলে বার্সা কোচ বলেছেন, ‘আমরা ক্ষুব্ধ। লাল কার্ডটাই ক্ষতি করেছে। ১১ বনাম ১১ অবস্থায় আমরা ভালোই সংগঠিত ছিলাম। এটাই পুরোপুরিভাবে সব কিছু বদলে দিয়েছে। আমার মতে, আরাউহোকে লাল কার্ড দেওয়াটা বাড়াবাড়ি ছিল।’রেফারির সমালোচনা করে জাভি আরও বলেছেন, ‘রেফারিটা সত্যিই বাজে ছিল। আমি তাকে বলেছি, সে খেলার কিছুই বোঝে না। সে লড়াইটাকে শেষ করে দিয়েছে। আমি রেফারিকে নিয়ে কথা বলা পছন্দ করি না, কিন্তু এটা বলতেই হবে।’
আরাউহোর লাল কার্ড কীভাবে ম্যাচের গতিপথ বদলেছে তা ব্যাখ্যা করে জাভি বলেন, ‘১০ জনে পরিণত হওয়া ভালো ব্যাপার নয়। সেই মুহূর্ত থেকেই এটা ভিন্ন একটা ম্যাচ হয়ে যায়। ম্যাচটা কথা বললে আমরা বুঝব যে, সেটাই আসলে সব কিছুর নির্ধারক ছিল।’ এই ম্যাচে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে জাভিকেও। বার্সা মিডফিল্ডার ইলকাই গুন্দোয়ানকে পিএসজি ডিফেন্ডার মার্কুইনোস ফাউল করার পর পেনাল্টি না দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিজ্ঞাপনী বোর্ডে লাথি মারেন জাভি, আর এ কারণেই দেখতে হয়েছে লাল কার্ড। নিজের লাল কার্ড নিয়ে জাভি বলেন, ‘সেটা আমার ভুল ছিল। দোষটা আমারই ছিল।’
পিএসজি কোচ এনরিকেও ম্যাচ শেষে লাল কার্ড নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি রেফারি নিয়ে কথা বলি না। কোচ হিসেবে আমি কখনো রেফারিকে নিয়ে কথা বলিনি। আমি সেখানেই মনোযোগ দেই, যা আমার নিয়ন্ত্রণে থাকে।’ এ সময় তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি সত্যিই মনে করি যে, লাল কার্ড ছাড়াও আমরা ম্যাচটা জিততে পারতাম। যদিও আমরা তা প্রমাণ করতে পারব না।’