সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।গতকাল শনিবার দিনগত রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে র্যাব-২ তাকে গ্রেপ্তার করে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া।তিনি জানান, সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। পরে র্যাব তাকে আদাবর থানায় হস্তান্তর করেছে।
এ বিষয়ে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান বলেছেন, ‘ফরহাদ হোসেনকে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।’র্যাবের পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, হাতিরঝিল থানার নিউ ইস্কাটন এলাকার ৩৯৮ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস বলেন, ‘৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মেহেরপুর থানায় তিনটি এবং ঢাকার আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। তাকে আমরা আদাবর থানার মামলায় হস্তান্তর করেছি।’
অভিযোগ রয়েছে, ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উড়ে এসে জুড়ে বসার মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে একতরফা নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন ফরহাদ হোসেন। আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকলেও এমপি হওয়ার সুবাদে ২০১৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন তিনি।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তার মুকুটে লাগে প্রতিমন্ত্রীর পালক। করা হয় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর তাকে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের।
ফরহাদ হোসেন ১৯৭২ সালে মেহেরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছহিউদ্দিন বিশ্বাস মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। তিনি তৎকালীন কুষ্টিয়া-৫ (বর্তমান মেহেরপুর-১) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০২২ সালে ছহিউদ্দিন মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।
ফরহাদ হোসেন খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ছিলেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পাস করেন। এরপর ঢাকা সিটি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হন। ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম শিলা আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাতিজি।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর পর থেকে এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ২৫ জন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলো। এর মধ্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং জ্বালানি, খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী রয়েছেন।