ইরানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলের মধ্যে চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে লেবাননের যে কোনও সিদ্ধান্তে সমর্থন দেবে তেহরান। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সিনিয়র উপদেষ্টা আলী লারিজানি এটি নিশ্চিত করেছেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বৈরুতে হিজবুল্লাহ সমর্থিত লেবানন পার্লামেন্টের স্পিকার নবীহ বেরির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আলি লারিজানির। এসময় লেবাননের সরকার কর্তৃক গৃহীত যেকোনো সিদ্ধান্তকে সমর্থন, বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন ১৭০১ এর বাস্তবায়ন চায় তেহরান।
এক সংবাদ সম্মেলনে লারিজানিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি মার্কিন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে বৈরুত এসেছেন?
উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু নষ্ট করতে চাই না। আমরা সমস্যাগুলোর সমাধান চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে কোনও পরিস্থিতিতে লেবাননের সরকারকে সমর্থন করি।’
এর আগে আরেক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, লেবাননে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বৃহস্পতিবার লেবাননের পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরির কাছে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। এতে সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলের মধ্যে লড়াই বন্ধ করার সমাধান অনুসন্ধান করা হয়েছে।
গাজা যুদ্ধের সমান্তরালে আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষের পর ইসরাইল সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে লেবাননে বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করে। এতে প্রাণ হারান হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ, হাশেম সাফিয়েদ্দিনসহ অনেক শীর্ষ কমান্ডার। বিপরীতে হিজবুল্লাহর সঙ্গে লড়াইয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে ইসরাইলি সেনাদেরও। গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধে অন্তত ৪৭ ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে। আর আহত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক। শুধু গত বুধবারই নিহত হয়েছে ৬ সেনা।
অন্যদিকে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লেবাননে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩ হাজার ৫০০ জন নিহত এবং সাড়ে ১৪ হাজারের কাছাকাছি আহত হয়েছে।
এদিকে বুধবার (১৪ নভেম্বর) ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোট জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির পরও লেবাননে হামলার স্বাধীনতা চায় ইসরাইল। তবে এ ধরণের শর্ত ইরান মানবে কি না তার সংশয় রয়ে যাচ্ছে।
এদিকে লেবাননের সরকার বলছে, যদি কোনো চুক্তি হয়, তবে তা জাতিসংঘের রেজুলেশন ১৭০১-এর ভিত্তিতে হবে। ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ ও ইসরাইল যেভাবে যুদ্ধের সমাপ্তি করে ঠিক সেভাবে।