মানিকগঞ্জে ব্যাঙের ছাতার মতো যত্রতত্র গড়ে উঠেছে শতাধিক মানহীন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি সেন্টার। প্রায় প্রতিষ্ঠানগুলোই মানছে না স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো নীতিমালা। এসব প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে এসে প্রতিদিনই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন রোগীরা।সেইসঙ্গে ভুল ও অপচিকিৎসায় ঘটছে মৃত্যুর ঘটনাও। মাঝে মাঝে এসব ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দিলেও পুনরায় অদৃশ্য কারণে আবার চালু হচ্ছে সে সব প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই চলছে এসব ক্লিনিক ও প্যাথলজি সেন্টার।
একাধিক ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ জেলা সদরসহ ৭ উপজেলায় বিভিন্নস্থানে গড়ে উঠেছে দেড় শতাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হাসপাতাল ও ক্লিনিক। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা সরকারি নিয়ম-নীতিকে উপেক্ষা করে বছরের পর বছর অবৈধভাবে চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা ব্যবসা। অনেক প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ টেকনোলজিস্ট, নেই সার্বক্ষনিক ডাক্তার ব্যবস্থা।
এসব প্রতিষ্ঠানের ভুল প্যাথলজি রিপোর্টের গ্লানি টানতে হচ্ছে রোগীকে। একই পরীক্ষা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভিন্ন ভিন্ন ফলাফলে দিশেহারা হচ্ছেন দরিদ্র রোগীরা। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে ভুল ও অপচিকিৎসায় একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও অদৃশ্য কারণে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এসব চিকিৎসা কেন্দ্রে কতটা সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে সেটা নিয়েও সুশীল সমাজে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র মতে, জেলায় ১৪৭টি বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন থাকলেও অধিকাংশের নেই হালনাগাদ। আর শতাধিক প্রতিষ্ঠানের নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। এ বছরের গত ৩ মাসে ১৭টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের নীতিমালা না মানায় কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে ১২টি প্রতিষ্ঠানের। এসব প্রতিষ্ঠানের ক্রুটি থাকায় কিছু প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার কথাও স্বীকার করেছেন ক্লিনিক ও হাসপাতালের মালিকরা।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মো. মোয়াজ্জেম আলী বলেন, জেলায় স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নত করার লক্ষে প্রতিনিয়ত প্রাইভেট ক্লিনিক হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সরকারি নিয়ম না মেনে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে তাহলে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন।