মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত এক সপ্তাহ যাবত দেশেরবিভিন্ন স্থানে মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার সকালে টানা বৃষ্টিতে ডুবে যায় রাজধানীর অধিকাংশ এলাকা। বিকেলের দিকে কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টির পানি কমলেও এখানে-সেখানে জমে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব জমানো পানিতেই ডেঙ্গু মশার প্রজনন ঘটবে দ্রুত গতিতে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করলে এডিস মশার বিস্ফোরণ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তারা। এমনকি আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসাবে পূর্বের সব রেকর্ড ভাঙারও আশঙ্কা করছেন তারা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের শুরু থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৭ জন রোগী। এ সময় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩১১ জন। এর মধ্যে দুই হাজার ৬০৬ জন পুরুষ এবং এক হাজার ৭০৫ জন নারী রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) বরিশাল বিভাগে ১০ জন, চট্টগ্রামে ২৩ জন, ঢাকায় ১৫ জন, খুলনা বিভাগে আট জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে দুই জন রয়েছেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২০ জন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২৫ জন রয়েছেন।
২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের ডেঙ্গু হয়েছিল। গত বছরের ৩১ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যে কয়জনের মৃত্যু হয়েছিল, চলতি বছরের একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় তিনগুণ মানুষের। গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন দুই হাজার ২২ জন। যার মধ্যে ঢাকায় রোগী ছিল এক হাজার ৩৭৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ছিল ৬৪৪ জন। গত বছরের একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। এর বিপরীতে চলতি বছরের ১১ জুলাই পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৩১১ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪৭ জনের। যা গত বছরের প্রায় তিনগুণ। তবে জুন মাসেআক্রান্তও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল কিছুটা কম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে ১ থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৫৫ জন। এর মধ্যে মারা যায় ৬ জন।
রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে রাজধানীর মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। ৫০০ শয্যার হাসপাতালটিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিল ১৮ জন। এর মধ্যে শিশু ১ জন। এ পর্যন্ত হাসপাতালটিতে চলতি বছর ৯০৯ জন ডেঙ্গু রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে যাদের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে হাসপাতালটির পরিচালক ডা. এস এম হাসিবুল ইসলাম বলেন, আমাদের ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ওয়ার্ড রয়েছে। যদি রোগী আরও বাড়ে তাহলে ওইসব ওয়ার্ড চালু করা হবে। একইরকম প্রস্তুতি রয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালেরও। বৃষ্টিবাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুআক্রান্ত রোগীরও ভিড় বাড়ছে। তবে চিকিৎসার পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বৃষ্টির কারণে এডিস মশার ঘনত্ব কমলেও থেমে থেমে বৃষ্টি মশার ঘনত্বকে বাড়ায়। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। যে কয়েক জায়গায় ভারি বৃষ্টিপাতহচ্ছে সেখানেও বৃষ্টির পানি জমে থাকছে। আর তাই সাম্প্রতিক বৃষ্টি এডিস মশার প্রজননে খুবই উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার জনকণ্ঠকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গা জরিপ করে দেখেছি কিউলেক্স মশার তুলনায় এডিস মশার ঘনত্ব বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে বাড়ছে ডেঙ্গুও। মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা হচ্ছে ২৫-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা যদি ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তখন যেকোনো মশার প্রজনন কমে যায়। তাপপ্রবাহে মশার প্রজনন কমলেও সাম্প্রতিক থেমে থেমে বৃষ্টিতে আবারও উপযুক্ত আবহাওয়া পেয়েছে এডিস মশা। আমাদের দেশে সাধারণত জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হলেও চলতি বছর এর আগেই এর দৌরাত্ম্য শুরু হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে আমরা ঢাকা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চাঁদপুর, বরিশালসহ কয়েকটি জেলায় মশার ঘনত্ব পরীক্ষা করেছি। এসব জেলায় মশার ঘনত্ব অত্যধিক। এখনই মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। কার্যকর ব্যবস্থা বলতে শুধু সিটি করপোরেশন একা নয় সরকারের সবগুলো সংস্থার সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে মশা নিধনে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এবং অতি অবশ্যই এতে জনসধারণকে সম্পৃক্ত করতে
হবেতবে ভারি বৃষ্টির পানি সরাতে এবং যেন কোনো এলাকাতেই পানি জমে না থাকে তার জন্য নিয়মিত তৎপরতা চালাচ্ছে সিটি করপোরেশনগুলো।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শুক্রবার ভোর থেকে ভারি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ চলছে। করপোরেশনের ৫ হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করছে। এ ছাড়া ১০টি কুইক রেসপন্স টিমও রয়েছে। কোথাও কোনো পানি জমে থাকলে ডিএনসিসির হটলাইন ১৬১০৬ নাম্বারে ফোন দেওয়ার কথাও বলছেন তারা। একই রকমভাবে পানি নিষ্কাশন কার্যক্রম চালাছে ঢাকা দক্ষিণ করপোরেশনও (ডিএসসিসি)। করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও প্রকৌশলী বিভাগের ১০০টি টিম মাঠপর্যায়ে কাজ করছে জানিয়ে করপোরেশনের এক কর্মকর্তা জানান, জলাবদ্ধতার কারণে যেন এডিস মশার জন্ম না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করছে সিটি করপোরেশন। সব কর্মী একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার ১৮টি ওয়ার্ড মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর ‘উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার ১০টি এবং উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার ৮টি ওয়ার্ড রয়েছে। এসব ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের পরিমাণ নির্দিষ্ট মানদ-ের থেকেও বেশি। এক জরিপের পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তর বলছে, রাজধানীর প্রায় ১৫ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। ঢাকা উত্তরের ১৪.৩০ শতাংশ এবং ঢাকা দক্ষিণের ১৪.৯৮ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিতে ব্রুটো ইনডেক্স ২০ এর বেশি। এর অর্থ হচ্ছে, এসব এলাকার ১০০টির মধ্যে ২০টির বেশি পাত্রে মশা বা লার্ভা পাওয়া গেছে। এই এলাকাগুলো ডেঙ্গুর বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
বৃষ্টির জমে থাকা পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়বে এবং এই ডিমগুলো এখনি ধ্বংস না করলে আগামী কয়দিনে ডিম ফুটে এডিস মশা জন্মাবে হু হু করে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদের কামড়ে বাড়বে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, গত কয়দিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছাড়া ছাড়াভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় এডিসের প্রজননের সম্ভাবনা বেশি। এডিস মশার জীবনচক্র ডিম পাড়ার পরবর্তী সময় থেকে চারটি ধাপে ডিম, লাভা পিউপা এবং পূর্ণাঙ্গ অবস্থা সম্পন্ন হয়। তার জন্য এক সপ্তাহ বাকয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। স্ত্রী মশাগুলো বন্যার সময় জলাধার যেমন, গাছের গর্ত বা উদ্ভিদ অক্ষের কাছাকাছি কালো রঙের ডিম জমা করে। ডিম পাড়ার জন্য সবচেয়ে উপযোগী জায়গা হচ্ছে মানুষের তৈরি জিনিসপত্র যেমন মাঠির পাত্র, প্লাস্টিকের বোতল এবং গাড়ির চাকা। পানিতে নিমজ্জনের পর ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার এই প্রক্রিয়াটি কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগে। সেই হিসেবে আগামী দুই সপ্তাহ একটু বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময়টায় নিজেকে মশার কামড় থেকে রক্ষার পাশাপাশি বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। না হলে মাসের শেষে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগস্ট থেকে বাড়তে থাকে এর ভয়াবহতা। কিন্তু চলতি বছর মার্চের মাঝামাঝি থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি শুরু হয়। এতে করে এডিস মশারা তাদের প্রজননে উপযুক্ত আবহাওয়া পেয়ে যাচ্ছে। এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে জুলাই মাস পুরোটাই ভুগতে হবে। আর এর অন্যতম কারণ হিসেবে ডেঙ্গুর প্রজননস্থল ধ্বংসে ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন তারা। একই সঙ্গে আবহাওয়ার তারতম্যও সমানভাবে দায়ী উল্লেখ করে তারা বলছেন, এখনি ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করতে পারলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
বছরের প্রথম ৬ মাসের আক্রান্ত ও মৃত্যুর এ পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পাবে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ জনকণ্ঠকে বলেন, এ বছর ডেঙ্গুর মৌসুমে বিশেষ করে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ভয়াবহহতে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগাম পদক্ষেপ হিসেবে এডিস মশার প্রজননস্থল অপসারণ বা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। বিশেষ করে রাজধানী বা রাজধানীর বাইরে যেসব হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের বাড়ির ঠিকানা সংগ্রহ করে ওইসব বাড়িতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালাতে হবে। একই সঙ্গে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রুখতে স্বাস্থ্যবিধি মানারও তাগিদ দিয়েছেন তারা।
পানি জমে থাকার পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার কারণ হিসেবে উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়াকেও দায়ী করেছেন ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, এই আবহাওয়া মশা ও মশাবাহিত রোগ বিস্তারের জন্য উত্তম জায়গা। উপযুক্ত তাপমাত্রা, আর্দ্রতার সঙ্গে যোগ হয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ণ। বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গুর চোখ-রাঙানি আরও আতঙ্কিতকরে তুলেছে নগরবাসীকে। এখন আর নির্দিষ্ট কোনো সময় নয় বরং সারাবছর এডিস মশা নিধনে অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সেবামূলক সংস্থা এবং স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা এডিস মশা ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত হলে অবশ্যই ভালো ফল আসবে। তবে তাদের এই কার্যক্রম নিয়মিতভাবেমনিটরিং করতে হবে। তিনি বলেন, একসময় ডেঙ্গু ঢাকার রোগ ছিল, কিন্তু এখন এটি বিস্তৃত হয়ে সারা দেশের প্রতিটি জেলায় ছড়িয়েছে। আমরা এমনও গ্রাম দেখেছি ডেঙ্গুর জীবাণুকে ডেঙ্গুর জীবাণু হিসেবে মানতেই নারাজ অনেকে। তাদের মতে এটি পানির পোকা। ফলে ওইসব মশা বিস্তার লাভ করে মানুষজনকে কামড়াচ্ছে। এতে করে রাজধানীর বাইরে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু রোগী। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নেই। দেশজুড়ে নানান উন্নয়ন কর্মকান্ডের কারণে নির্মাণসামগ্রীতে জমছে পানি। যাতে ডেঙ্গু মশা প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ পাচ্ছে। একই সঙ্গে মানুষজনের মধ্যেও রয়েছে এক ধরনের উদাসীনতা। বছর বছর এত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, বরণ করছে করুণ মৃত্যু কিন্তু তারপরও তাদের মধ্যে সচেতনতা নেই। অনেক বিশাল বিশাল আবাসিক ভবনগুলোর গ্যারেজে পানি জমে থাকছে। একইভাবে অনেকে শখ করে বাড়ির বারান্দা বা ছাদে টবে বাগান করছেন। সেখানেও পানি জমছে। এভাবেই ডেঙ্গু তার প্রজননের উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে দৌরাত্ম্য বাড়াতে পারছে। তাই শুধু নীতি-নির্ধারক নয় বরং সব শ্রেণি-পেশার মানুষকেও ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে কাজ করতে হবে।
তবে ডেঙ্গুর চিকিৎসা য় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের। প্রতি বছর যেভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্তলাল সেন। তাই ডেঙ্গু রোধে বাসাবাড়ির সবকিছু পরিষ্কার রাখার নির্দেশ দিয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, আমরা হাসপাতালগুলোতে বলে রেখেছি।
এখন চিকিৎসকরা ডেঙ্গু চিকিৎসা সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন। স্যালাইনের যে সংকটের কথা ভাবা হয়েছে, সেটা নিয়েও আমি বৈঠক করেছি। স্যালাইনের কোনো সংকট হবে না। তবে ডেঙ্গু না হোক সেটা আমাদের সবার প্রার্থনা। বিপর্যয় না হওয়ার জন্য কী করতে হয় সেটা আপনারা ভালো করে জানেন। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিভাগ প্রস্তুত রয়েছে। তবে ডেঙ্গুর চিকিৎসা স্বাস্থ্যবিভাগ দিতে পারলেও এর বিস্তার রোধ করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে সিটি করপোরেশনগুলোকে মশা মারার জন্য আরও কার্যকর পদক্ষে নিতে হবে।