১৫ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ভারত আওয়ামী লীগকে ‘অস্ত্র হিসেবে’ ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেছেন, ভারত সব সময় আওয়ামী লীগের চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখেছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ‘জনগণের সঙ্গে জনগণের’ নয় বা ‘রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের’ নয় বরং ‘ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের’ সম্পর্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, ভারতের জনগণের সঙ্গে আমাদের জনগণের বিমাতাসূলত সম্পর্ক নেই। বরং ভারতের সরকার দেড়যুগের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আওয়ামী লীগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। আমাদের অস্বস্তি সেই জায়গায়।’
তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক কিছু উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে সব জায়গায়। ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনে হামলা হয়েছে, সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে বিশ্ব গণমাধ্যমে দেখানো হচ্ছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা অনিরাপদে রয়েছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সংস্কার কমিশনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা মাঠের বর্তমান পরিস্থিতি তাকে জানানোর চেষ্টা করেছি।’
হাসনাত বলেন, ভারত সরকারের সঙ্গে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় করা ‘অসম চুক্তি’ প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ফেলানীসহ সীমান্তে যতগুলো হত্যা হয়েছে, সেগুলোর বিচার নিশ্চিত এবং পানির ন্যায্য হিস্যা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক যাতে ন্যায্যতার ভিত্তিতে হয় এবং তাতে মর্যাদা থাকে—এমন কথাও বলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ মনে করে, দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানা উচিত। সেই কথাটি প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছি।’
ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাসনাত বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কটি যেন জনগণের সঙ্গে জনগণের, রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের হয়। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতার প্রশ্নে বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও মুসলামনারা এক সঙ্গে লড়াই করব। ভারত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগকে নির্ভর করে যে অন্যায্য সম্পর্ক তৈরি করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন আবারও এ ধরণের অন্যায্য সম্পর্ক তৈরি করতে পারবেন, তাহলে ভ্রান্তির মধ্যে আছেন। বর্তমান সরকার জনগণের রায়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এসেছে। আওয়ামী লীগের দৃষ্টিতে না দেখে, জনগণের দৃষ্টি দিয়ে সরকারের সঙ্গে ন্যায্যতার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলুন। কোন কারণে সম্পর্ক খারাপ হলে অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্বার প্রশ্নে একহাত, একচুল পরিমাণ ছাড় দেব না।’