সম্প্রতি ইন্টারনেটেরগতির বিস্ময় সৃষ্টি করা এক বিশ্বরেকর্ড গড়েছে ‘অ্যাস্টন ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহাম’-এর বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা দল। প্রতি সেকেন্ডে ৩০১ টেরাবিট ও নয় হাজার এইচডি সিনেমার সমতুল্য এক আদর্শ অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছেন তারা, যা এখনকার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চেয়ে ৪৫ লাখ গুণ দ্রুতগতির। ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন -জামিউর রহমান
সম্প্রতি ব্রডব্যান্ডের চেয়ে ৪৫ লাখ গুণ দ্রুতগতির ইন্টারনেট চালিয়ে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন গবেষকরা। এ গতিতে, ‘ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেস (আইএমডিবি)’র তালিকাভুক্ত সবগুলো সিনেমা ডাউনলোড করতে সময় লাগবে কেবল এক মিনিট। অথচ গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘অফকম’-এর প্রতিবেদনে উঠে আসে, দেশটিতে ব্রডব্যান্ডের গড় গতি সেকেন্ডে ৬৯ দশমিক আট মেগাবিট। যুক্তরাজ্যের অ্যাস্টন ইউনিভার্সিটির স্কুল অব কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ডিজিটাল টেকনোলজিস বিভাগের অধ্যাপক ড. ইয়ান ফিলিপস বলেন, বিস্তারিত বললে- বাড়ি বা অফিসের ইন্টারনেট সংযোগে ব্যবহৃত অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ডেটা পাঠানো হয়েছিল এতে। তবে বাণিজ্যিকভাবে বাজারে পাওয়া সি ও এল-ব্যান্ডের পাশাপাশি আমরা এখানে ই-ব্যান্ড ও এস-ব্যান্ড নামের দুটি অতিরিক্ত বর্ণালী ব্যান্ড ব্যবহার করেছি। এ ধরনের ব্যান্ড সাধারণত ব্যবহার করা হয় না কারণ সি ও এল-ব্যান্ডেই ভোক্তাদের চাহিদা মেটানোর প্রয়োজনীয় ধারণক্ষমতা আছে।
এদিকে নতুন ফাইবার ও তারের ব্যবহার ছাড়াই ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর এ ক্ষমতাকে বাণিজ্যিক ইন্টারনেট গতি আপগ্রেড করার ইতিবাচক উপায় হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি। এ রেকর্ডভাঙা ডেটা আদান-প্রদানের হার অর্জিত হয়েছে নতুন ‘অপটিক্যাল প্রসেসিং’ ডিভাইস তৈরির মাধ্যমে। এতে বিভিন্ন এমন তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে ব্যান্ডউইথ সামনে এসেছে, যা এর আগে কখনও ফাইবার অপটিক সিস্টেমে ব্যবহার করা হয়নি। উল্লেখ্য, ফাইবার অপটিক এক ধরনের পাতলা, স্বচ্ছ তার, যা সাধারণত বিশুদ্ধ কাঁচ (সিলিকা) বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি ও আলো পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
বিস্তারিত বললে, বাড়ি বা অফিসের ইন্টারনেট সংযোগে ব্যবহৃত অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ডেটা পাঠানো হয়েছিল এতে। দ্রুতগতির ইন্টারনেটের জন্য ভোক্তাদের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে গবেষকরা দাবি করেছেন, তাদের এই নতুন প্রযুক্তি ইন্টারনেট সেবাদাতাদের দ্রুতগতির ইন্টারনেট সরবরাহে সহায়ক হতে পারে। এদিকে, নতুন ফাইবার ও তারের ব্যবহার ছাড়াই ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর এ ক্ষমতাকে বাণিজ্যিক ইন্টারনেট গতি আপগ্রেড করার ‘ইতিবাচক’ উপায় হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট। অপটিক্যাল ফাইবার প্রযুক্তির অগ্রগতি যে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক খাতে বিপ্লব ঘটানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, তা ফুটে উঠেছে যুগান্তকারী এ অর্জনে। এর মধ্যে রয়েছে দ্রুতগতির ও নির্ভরযোগ্য ডেটা আদান-প্রদানের মতো বিষয়গুলোও। গবেষণাটি প্রকাশ করেছে ‘ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইটি)’, যা উপস্থাপিত হয়েছিল ‘ইউরোপিয়ান কনফারেন্স অন অপটিক্যাল কমিউনিকেশন (ইওসিসি)’ আয়োজনে।