মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা বিএনপি আহ্বায়কের সাঁটানো পোস্টার-ব্যানার উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তুরাগ খান ছিঁড়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই পোস্টার-ব্যানার পা দিয়ে মাড়িয়েছেন ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী। এ–সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়েছে।
পোস্টার ছেঁড়ার ঘটনায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে থেকে তুরাগ খানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে তুরাগের দাবি, সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিএনপির কিছু পোস্টার ছিঁড়েছেন। সেই সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন, তবে পোস্টার ছেঁড়ায় অংশ নেননি।
শিবচর উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভিডিওটি গত ২৭ অক্টোবরের। ওই দিন যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে রাতে ছাত্রদলের আহ্বায়ক তুরাগ খানের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী শিবচর পৌর শহরের কলেজ রোড, স্বাধীনতা চত্বর, ৭১ সড়ক, জেলখানার মোড়, হাসপাতাল রোডসহ অন্তত ১০টি স্থানে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামাল জামান নুরুদ্দীন মোল্লার সাঁটানো ব্যানার-ফেস্টুন ছেঁড়েন। ব্যানারগুলো সাধারণ মানুষের সামনেই ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী পা দিয়ে মাড়ান। উপজেলা বিএনপির ভেতরের কোন্দলে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে দাবি করেছেন উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের একাধিক নেতা।
শিবচর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে কোন্দল আছে। এ কারণে এক গ্রুপের ইন্ধনে ছাত্রদলের আহ্বায়ক তার নেতৃত্বে এই জঘন্যতম কাজ করেছে। এ দায় দলের নয়, ব্যক্তিকে নিতে হবে। তার জন্য দলের নেতা-কর্মীরা বিব্রত। আমরা তার (তুরাগ খান) বিচার চাই।’
ফেসবুকে ছড়ানো এক মিনিট দুই সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ১৫ থেকে ২০ জন যুবককে সঙ্গে নিয়ে ছাত্রদলের আহ্বায়ক তুরাগ খান ব্যানার ফেস্টুন ছিঁড়ছিলেন। এ সময় কয়েকজনকে ব্যানারগুলো পা দিয়ে মাড়াতেও দেখা যায়। পরে তাঁরা সড়কের পাশে ব্যানার-ফেস্টুন ফেলে রেখে চলে যান। এ সময় উৎসুক মানুষ ছবি তোলেন ও ভিডিও করেন।
শিবচর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামাল জামান নুরুদ্দীন মোল্লা বলেন, ‘ছাত্রদলের আহ্বায়ক তুরাগ খানের নেতৃত্বে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের সঙ্গে আমার সব ছবিযুক্ত ফেস্টুন ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। পা দিয়ে পিষ্ট করা হয়েছে। এ ভিডিও আমি দেখেছি। বিএনপির ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়, এমন কাজই ওই ছাত্রদলের নেতা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদকে জানিয়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে শিবচর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তুরাগ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার নেতৃত্বে বিএনপির পোস্টার ছেঁড়া হয়েছে, বিষয়টি সঠিক নয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ব্যানার–ফেস্টুন ছিঁড়েছেন। ওই সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। এটা হয়তো আমার অপরাধ। আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শোকজ করেছে। সেখানে আমি ক্ষমা চেয়ে জবাব দিয়েছি।’