পারুল আক্তার থাকতেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধসংলগ্ন খালের পাশে টিনশেড ঘরে। স্বামী-সন্তান নিয়ে তিন মাস ধরে সেখানে ছিলেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে থাকার সেই ঘর নিজেদেরই ভেঙে ফেলতে হয়েছে। এখন কোথায় গিয়ে থাকবেন, তা জানে না এই পরিবার।
ছাগলকাণ্ডে আলোচিত বেড়িবাঁধসংলগ্ন এলাকার ‘সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম’ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এই ফার্মের পাশেই থাকতেন পারুল। উচ্ছেদ অভিযান শুরুর আগেই তারা নিজেদের থাকার ঘরের টিন খুলে নেন। পায়ের সমস্যার কারণে কোনো কাজ করতে পারেন না পারুল আক্তার। তার স্বামী রাজধানীতে রিকশা চালান। ভাড়া থাকার সামর্থ্য না থাকায় তিন সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে অবৈধ জায়গায় টিনশেড ঘরে থাকতেন।
পারুল আক্তার বলেন, ‘আমি তিন মাস ধরে আইছি। সরে যাওয়ার জন্য নোটিশ আইছে। নোটিশটা যহন আইছে, নোটিশটা যদি সরকারিভাবে আইয়া থাকে, তাইলে সরকারের সিল থাকব না? এখানে সরকারের কিছু নাই। আমগো সরানোর লাইগা চামচারা এরকম করছে।’
ঘর ভেঙে ফেলার পর কোথায় যাবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে ওই নারী বলেন, ‘এহন আর কই যামু, ভাড়া দেওয়ার ভয়তে তো এই জায়গায় আইছি। সেটা তো এখন আর হইলো না। এখন আর কী করুম। পোলাপান লইয়া কি রাস্তায় থাকা সম্ভব?’ টিনশেড ঘর অবৈধ হলে পাশের বড় বড় ভবনগুলো অবৈধ দাবি করে পারুল আক্তার বলেন, ‘আমগো এগুলা যদি খালের ভিতর পইরা থাহে, তাহলে এই বিল্ডিংগুলা তো খালের ভিতরে পড়ছে।’
জানা গেছে, আজ বেলা ১২টার পর সেখানে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ডিএনসিসি। অভিযান শুরুর আগেই গতকাল বুধবার রাত থেকেই সাদিক অ্যাগ্রোর বেশ কিছু গরু সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া খাল ও সড়কের জায়গায় অবৈধভাবে দখল করে রাখা অস্থায়ী স্থাপনাও সরিয়ে নেওয়া হয়।
ঢাকা উত্তর সিটির অঞ্চল ৫-এর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে তারা (সাদিক অ্যাগ্রো) রামচন্দ্রপুর খালের জায়গা ভরাট করে খামার করেছে। রাস্তার জায়গায় বেড়া দিয়ে গরুর অবৈধ হাট বসিয়েছিল। এর আগেও তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু খামার কর্তৃপক্ষ এসব তোয়াক্কা করেনি।’