Skip to content

পরিবেশ সচেতনতায় অনন্য উদ্যোগ

    পরিবেশ সচেতনতায় অনন্য উদ্যোগ prothomasha.com

    ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের খুব পরিচিত এক শব্দ। যা শিক্ষকদের হাতে থাকা ধারাবাহিক মূল্যায়নের চল্লিশ মার্কের অংশ। শব্দটি জুড়ে আছে বিরক্তিকর অনুভূতি। কেননা এটি করতে গিয়ে ক্লান্তি এসে যায়, পড়তে হয় মানসিক চাপে। যা শিক্ষার্থীদের কাছে অতিরিক্ত চাপেরও মনে হয়। তবে এমন মনে হলেও এটির গুরুত্ব অনেক।বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দেওয়া এসব অ্যাসাইনমেন্ট সাধারণত গবেষণা প্রকল্প, প্রবন্ধ কিংবা কেস স্টাডি হয়ে থাকে। সম্প্রতি বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে সমনে রেখে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আতিকুর রহমানের এনভাইরনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্সে ভিন্ন রকম এক অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছেন। যা বিরক্তিকর হওয়ার বদলে হয়েছে আনন্দদায়ক। এতেই তিনি সবার দৃষ্টি কেরে হচ্ছেন প্রশংসিত।

    বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের  শিক্ষার্থীদের তিনি গাছ লাগানোর এসাইনমেন্ট দিয়েছেন। যা পরিবেশ সুরক্ষা ও সচেতনতা তৈরিতে কাজে দিবে। বিষয়টি এই কোর্সের সঙ্গে খুবই প্রাসঙ্গিক। যা সত্যিকার অর্থেই অনন্য ও ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ। বিভিন্ন প্রজাতির নানান রকম গাছ হাতে শিক্ষার্থীদের দেখা মেলে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে। কেউ খুঁড়ছে মাটি, কেউ আনছে খুঁটি, কেউবা গাছে ঢালছে পানি। প্রাণচঞ্চল, হাস্যোজ্জ্বল মুখে ছোটাছুটি করে বেশ উৎসাহের সঙ্গেই করছে তারা এ কাজ।
    একাডেমিক ভবনের সামনে তাদের লাগানো এগারো ধরনের প্রায় চল্লিশটি গাছের মধ্যে ছিল কাঁঠাল, জলপাই, আম, আতা, জাম্বুরা, বকুল, কৃষ্ণচূড়া, নিম, হরীতকী, কড়ই ও মেহগনি গাছ। ফুল, ফলজ, বনজ ও ঔষধিÑ কী ছিল না তাদের এ তালিকায়। অ্যাসাইনমেন্টে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী সিদরাতুল জান্নাত রিফা বলেন, আমার আগে থেকেই জানি আমাদের এ সবুজ ক্যাম্পাস নানা ধরনের গাছপালায় সুসজ্জিত।তারপরেও আমাদের এই শিক্ষাঙ্গন আরও সবুজ ও সুন্দর রূপে দেখার প্রত্যাশা আমাদের। সে জন্যই আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় অ্যাসাইনমেন্টের এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছি। আরেক শিক্ষার্থী ইউসা তাহসিন বলেন, ‘এই এসাইনমেন্ট আমাদের শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি। এটি আমাদের প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সাহায্য করেছে। সে জন্য স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। গাছ লাগানো এবং তার যতœ নেওয়া সত্যিই আনন্দের।’শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এভাবে বাস্তবভিত্তিক শিক্ষায় নতুন এক অভিজ্ঞতা অর্জন হলো। প্রতিবার এসাইনমেন্ট করতে চাপ এবং বিরক্তিকর লাগতো কিন্তু এবার একটুও তেমন মনে হয়নি। এতে এক দিকে যেমন বাস্তবতার নিরিখে অনন্দের সঙ্গে শেখা হচ্ছে তেমন মার্কও যুক্ত হচ্ছে। প্রকৃতির গুরুত্ব বুঝতে, পরিবেশ সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা ও পড়ানো বিষয়গুলো বাস্তবতার নিরিখে আরও ভালোভাবে বোঝাতেই এনভাইরনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্স শিক্ষক প্রভাষক আতিকুর রহমান এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।