দেশের ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষ কিডনি রোগে ভুগছেন। এর মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের কিডনি বিকল। শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে কিডনি ডিজিজ রিসার্চ গ্রুপ (কেডিআরজি) আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এসব তথ্য তুলে ধরেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেন, কিডনি রোগের শেষ পরিণতি কিডনি বিকল হওয়া। সেক্ষেত্রে বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় কিডনি সংযোজন অথবা ডায়ালাইসিস। কিন্তু এ চিকিৎসা খুব ব্যয়বহুল।
অনুষ্ঠানে ডায়ালাইসিস রোগীদের রক্তস্বল্পতায় ব্যবহৃত নতুন ওরাল ট্যাবলেট রক্সাডুস্টেট নিয়ে পরিচালিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। এ আয়োজনের সায়েন্টিফিক পার্টনার ছিল এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড আর ব্র্যান্ড পার্টনার ছিল ওরক্সেট। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, যেহেতু কিডনি রোগীদের রক্তস্বল্পতার চিকিৎসায় এই ওষুধ মুখে খাওয়া যায় এবং দামেও সাশ্রয়ী, তাই ওরাল ট্যাবলেট রক্সাডুস্টেট বাংলাদেশের কিডনি রোগীদের জন্য রক্তস্বল্পতায় একটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে। এটি রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় কমাতেও অনেকাংশে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজির (নিকডু) উদ্যোগে এবং কেডিআরজি ও স্যান্ডর সহযোগিতায় সভায় ট্রায়াল নিয়ে মূল আলোচনা করেন নিকডুর কিডনি রোগ বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মাসুদ ইকবাল ও বর্তমান বিভাগীয় প্রধান কাজী শাহনূর আলম। এ ছাড়া কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ আয়ুব আলী চৌধুরী ট্রায়াল সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে দেশের মানুষকে সেবা দিয়ে আসছে। ১৫০ শয্যা দিয়ে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে ৩০০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। আগামী জুলাই মাস থেকে এটি ৫০০ শয্যায় উন্নীত হবে। বক্তারা আরও বলেন, নামমাত্র চিকিৎসা খরচে দৈনিক প্রায় ৮০০ রোগী এ প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা পেয়ে থাকেন। এখানে প্রায় বিনা মূল্যে কিডনি প্রতিস্থাপনও করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১৩০ জন কিডনি রোগী মাত্র ৫০০ টাকায় ডায়ালাইসিস সেবা পাচ্ছেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিকডুর পরিচালক বাবরুল আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক রানা মোকাররম হোসেন ও মো. শহিদুল ইসলাম সেলিম, ঢাকা মেডিকেল কলেজের কিডনি রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নজরুল ইসলাম ও সহযোগী অধ্যাপক আবু সালেহ আহমেদ, বারডেমের কিডনি রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ওয়াসিম মোহাম্মদ মহসিনুল হক, সহকারী অধ্যাপক রাফি নজরুল ইসলাম ও তারিন আহমেদ। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদুল আলম, রেজিস্ট্রার মো. জাহিদ হাসান, কেডিআরজির প্রধান উপদেষ্টা এম ইকবাল আর্সলান, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।