Skip to content

দাঙ্গা না বাঁধলে কোনো তাজা গুলি ব্যবহার যাবে না

    দাঙ্গা না বাঁধলে কোনো তাজা গুলি ব্যবহার যাবে না prothomasa.com

    কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ‘গুলি না চালানোর’ নির্দেশনা চেয়ে রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্ট এ রিটের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, দাঙ্গা না বাঁধলে কোনো তাজা গুলি ব্যবহার করা যাবে না আজ আন্দোলনে গুলি না চালানোর রিট খারিজ করে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন।আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, ১. বাংলাদেশের সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় অংশগ্রহণের অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে। ২. মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ জীবন। তাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে মানুষের জীবন এবং মর্যাদা রক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। ৩. অনিবার্য প্রয়োজন ছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দায়িত্ব পালনের সময় বল প্রয়োগ করতে পারবে না।

    পর্যবেক্ষণে আদালত আরও বলেন, ৪. দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মানবাধিকার ও মানুষের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। ৫. সবার জন্য শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা থাকবে এবং তা সমানভাবে উপভোগ করতে পারবে। কোনো কর্তৃপক্ষ ব্যক্তি-গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে বৈষম্য করতে পারবে না।যখন কোনো সাধারণ সমাবেশ বা মিছিল বেআইনি সমাবেশ-মিছিলে পরিণত হবে, তখন পুলিশের কী দায়িত্ব? এ বিষয়ে আদালত বলেন, বেআইনি সমাবেশ, দাঙ্গা ও জনশৃঙ্খলা বা জনশান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ দমনে পুলিশ সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ, দণ্ডবিধি ও পদ্ধতিগত আইনের প্রয়োগ করতে পারবে। এক্ষেত্রে সংবিধানের ৩২, ৩৩(১)(ড), ৩৬, ৩৭, ৩৮ অনুচ্ছেদ, ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা, বেঙ্গল পুলিশ প্রবিধির (পিআরবি) ১৫৩, ১৫৪, ১৫৫, ১৫৬ ও ১৫৭ এবং দণ্ডবিধির ৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত বিধি অনুসরণ করবে।আদালত বলেন, যদি কেউ আইন লঙ্ঘন করে, তবে পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ব্যবহার করতে পারবে। আইনের লঙ্ঘন না হলে বা দাঙ্গা না বাঁধলে কোনো তাজা গুলি ব্যবহার করা যাবে না।হাইকোর্ট বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার পাশাপাশি পুলিশকে আইনি কাঠামোর মধ্যে থাকা অপরিহার্য।এর আগে, কার্যতালিকার ১০ নম্বরে থাকা এই বিষয়ে শুনানি শুরু হয় বেলা ১১টার দিকে। শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার এই রিটের শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও বিচারপতি মাসুদ হোসেন অসুস্থ হওয়ায় এই রিটের শুনানি হয়নি।

    কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কারীর মুক্তি ও শিক্ষার্থীদের দিকে গুলি ছোড়া বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা লিপি।এদিকে, আজ একই বেঞ্চে কোটা আন্দোলনের সময় বাসার ছাদে গুলিতে নিহত শিশু রিয়া গোপসহ ১৬ শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটের শুনানির জন্য আবেদন করলেও তা শুনানি না করে অন্য কোর্টে যেতে বলেন আদালত।