ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই চলেছে। গত কয়েক দিন ধরে ডিমের বাজারে নতুন করে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। আর পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। মাত্র কয়েক দিন আগে একই ডিম ডজন বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়।
এ পরিস্থিতিতে কেবল নিম্নবিত্তই নয়, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সামর্থ্য না থাকায় খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ এখন মাছ-মাংস কিনতে পারছেন না। বস্তুত যারা পুষ্টির জন্য ডিমের ওপর নির্ভরশীল, তারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।আজ সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি হালি ডিমের দাম ৫ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড়বাজার থেকে কিনলে ডিমের ডজন ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, আর খুচরা দোকানে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
মৌচাক বাজারের একজন ডিম বিক্রেতা বলেন, গত একমাস ধরে ডিমের বাজার অস্থির রয়েছে। ফার্মের মুরগির একটি ডিম পাইকারিতে কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকারও বেশি দামে। সামান্য লাভে বিক্রি করলেও প্রতি ডজনের দাম ১৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে অনেক ডিম ভেঙে যায়। ফলে খুচরায় প্রতি ডজন ১৬৫ টাকার কমে বিক্রি করলে লোকসান হয়।
রাজধানীর এক ডিম ব্যবসায়ী বলেন, উৎপাদন খরচ নির্ধারণ না হওয়ায় ডিমের বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো ধারণা করা যাচ্ছে না। খামারিরা বলছেন, মুরগির খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিমের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো হাত নেই।এদিকে রাজধানীর পাইকারি ডিম বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডিমের সরবরাহ কম। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারিরা। অতি গরমে অনেকের খামারে মুরগি মারাও গেছে। যার প্রভাব পড়েছে ডিমের বাজারে।খামারিরা বলছেন, ডিমের বড় ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের কারসাজিতে ডিমের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) জানায়, ডিমের বাজার অস্থির হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে রাজধানীর তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির কারসাজি। কারণ, তারাই সারাদেশের ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে।প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত ১০ অর্থবছরে দেশে ডিম ও দুধ উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এ সময়ে মাংস উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ১৭ কোটি, যা এখন বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৩৩৮ কোটি।