ঝালকাঠিতে সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিপক্ষের হামলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী সুলতান হোসেন খানসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে উঠান বৈঠক চলাকালে শহরের কীর্তিপাশা মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত সুলতান হোসেন খানকে প্রথমে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এবারের নির্বাচনে তিনি দোয়াত–কলম প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ সম্পর্কে আহত সুলতান হোসেনের স্ত্রী কহিনুর খান অভিযোগ করেন, ‘উঠান বৈঠক চলাকালে আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী খান আরিফুর রহমানের ক্যাডার বাহিনী এসে অতর্কিত হামলা চালায়। প্রতিহত করার চেষ্টা করলে সুলতান হোসেন খান ও তাঁর কর্মীদের লাঠিসোঁটা, পাথর দিয়ে মাথা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হামলাকারীরা। সেখানে চেয়ার-টেবিল এবং একটি প্রাইভেট কারও ভাঙচুর করা হয়েছে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে খান আরিফুর রহমান বলেন, ‘কীর্তিপাশা মোড়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সভায় কে বা কারা হামলা করেছে, তা আমি কিছুই জানি না। তবে কীর্তিপাশা মোড়ে দোয়াত–কলম মার্কার সমর্থকেরা আমার আনারস মার্কার অফিস ভাঙচুর করেছেন।’
পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, গতকাল রাতে কীর্তিপাশা মোড়ে উঠান বৈঠকের আয়োজন করেন সুলতান হোসেন খান। সভার শেষ দিকে তিনি বক্তব্য শুরু করলে হঠাৎ হামলা করা হয়। সুলতান হোসেন খানসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন সাংবাদিকও রয়েছেন। তাঁরা হলেন ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি শফিউল ইসলাম, ডিবিসি নিউজের অলোক সাহা ও আমাদের বার্তার প্রতিনিধি কামরুজ্জামান। আহত অন্যরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এস এম রুহুল আমীন, সুলতান হোসেন খানের সমর্থক কে এস জাহিদ, মনির খান, রুবেল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক। সুলতান হোসেন খানসহ অন্যদের উদ্ধার করে প্রথমে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুলতান হোসেন খানসহ আটজনকে শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাইম বলেন, সুলতান হোসেনের বাঁ কাঁধে, মাথা ও হাঁটুতে গুরুতর আঘাত লেগেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
সুলতান হোসেন খানের সমর্থক আহত কে এস জাহিদ বলেন, আনারস প্রতীকের প্রার্থী খান আরিফুর রহমানের সমর্থক জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা করেছেন। এদিকে ওই ঘটনার পর শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মহিতুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে। ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঝালকাঠি জেলা সদর ও নলছিটি উপজেলার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী রয়েছেন।