Skip to content

জনবল সংকটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সুচিকিৎসা বঞ্চিত লাখো মানুষ

    জনবল সংকটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সুচিকিৎসা বঞ্চিত লাখো মানুষprothomasha.com

    সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সঙ্কটে সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ৫০ শয্যার কমপ্লেক্সটির আউটডোর থাকছে নিয়মিত ডাক্তার শূন্য। নোংরা পরিবেশ বিরাজ করছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর অভাবে। 

    গোয়াইনঘাট উপজেলায় প্রায় ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার মানুষের বসবাস। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১১ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও উন্নত সেবা পায়নি এলাকাবাসী।

    এখানে চিকিৎসক পোস্টিং হলেও মন্ত্রণালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সহজেই বদলি হন চিকিৎসকরা, ফলে শূন্যপদ আর সহজে পূরণ হয়না। চিকিৎসা সেবা আর বঞ্চনার অবসান হয়না জনসাধারণের।

    কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্টের দশটি পদসহ মোট ৩০টি পদ থাকেলও বর্তমানে ইউএইচওসহ ৬জন চিকিৎসক রয়েছেন। ১০জন জুনিয়র কনসালটেন্টে’র মধ্যে শুধু মেডিসিন, এনেস্তেশিয়া দায়িত্বে রয়েছেন। সপ্তাহে ২/৩ দিন আসেন এছাড়া কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ডাঃ গুলশান আরা কামাল সংযুক্তিতে ফেঞ্চুগঞ্জে রয়েছেন। সহকারী সার্জন ইউনানি ডা: মো. আনিসুল হোসেন ২০১৪ সালে যোগদান করেই সংযুক্তিতে সিলেট সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন।

    এছাড়াও  অর্থপের্ডিক্স, ইএনটি, গাইনি, যৌন ও চর্মসহ জরুরী ১০ বিশেষজ্ঞ  চিকিৎসকের স্থলে দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন। মোট ৩০ পদে ৬ জন থাকলেও সকল বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাপক বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

    ইউএইচও বলেন লোকবল সঙ্কটেও আন্তরিকতার সাথে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

    উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: কিশোলয় সাহা বলেন, লোকবলের সঙ্কট ছাড়াও যারা আছেন তাদের মধ্যে ঢাকা, সিলেটে, ট্রেনিংয়ে দুজন, আরেকজনের বাবা মারাত্মক অসুস্থ তাকায় বাড়িতে গেছেন। আগামী সপ্তাহ থেকে আউটডোরে চিকিৎসক হিসেবে থাকবেন। এ ছাড়া এলকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে জরুরী বিভাগে ইএমও না থাকায় রোগীরা চিকিৎসকের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এখানে বেশীরভাগ সময় নার্স  রোগী দেখে ভর্তি করান। পরিচ্ছন্ন কর্মীর অভাবে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বিরাজ করছে নোংরা পরিবেশ।

    সম্প্রতি সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: জন্মে জয় দত্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে আসলে তার সাথে কথা হয় লোকবল সঙ্কট বিষয়ে। তিনি বলেন, ডাক্তার পোস্টিং, বদলী হয় মন্ত্রণালয় থেকে স্থানীয় প্রশাসনের এখানে কোন হাত নেই।

    জানা যায়, সিলেটের ৪/৫টি উপজেলা ছাড়া অন্য উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক থাকতে চান না। এছাড়া এখানে প্রথম এক্সরে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম চালু করেছিলেন বর্তমান স্বাস্থ্য প্রশাসক কিন্তু লোকবলের অভাবে ইতিমধ্যে এক্সরে-সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। দন্ত বিভাগে সরকার এক্সরে, চেয়ারসহ মূল্যবান যন্ত্রপাতি দিলেও ২০২২ সালের বন্যার কারণে নষ্ট হওয়ায় নেই দন্ত সার্জনও।

    গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যা উন্নীত হলেও আধুনিক সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন সাধারণ মানুষ। সরকার এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের জন্য চিকিৎসা  নিশ্চিতের কথা শুধু খবরের কাগজ আর মানুষের মুখে শুনেই আসছেন। যেখানে উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসক তুলে নেওয়া হয় সেখানে পল্লীবাসীর সেবা পাওয়া স্বপ্নের মতো। স্থানীয় এলাকাবাসীর প্রত্যাশা সরকার গোয়াইনঘাটের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে কমপ্লেক্সটিতে জরুরী ভিত্ততে শুন্যপদ পূরণ করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে আন্তরিক হবেন।