পারিবারিক অশান্তির জেরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বৃদ্ধ খেজের আলীকে তার ছেলে আনোয়ার হোসেন হত্যা (৪৬) করেছেন। কোদাল দিয়ে তার বাবার মাথায় আঘাতের পর বুকের হাড় ভেঙে মৃত্যু নিশ্চিত করেন তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় আনোয়ারকে গ্রেপ্তারের পর তার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এসক তথ্য জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রোববার (৩১ মার্চ) দুপর ২টার দিকে কুষ্টিয়ার পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে এসব তথ্য জানান কুষ্টিয়া জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) শহীদ আবু সরোয়ার।
পিবিআই জানায়, গত বছরের ৭ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার সংগ্রামপুর গ্রামের একটি ভুট্টা খেত থেকে খেজের আলীর (৬৫) ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পরদিন ৮ অক্টোবর নিহতের ভাই নাজির আলী দৌলতপুর থানায় একটি মামলা করেন। থানা পুলিশ হত্যাকাণ্ডের কোনো কুলকিনারা বের করতে না পারায় পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে তদন্তের জন্য মামলাটি পিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে পিবিআই। তদন্তে বেড়িয়ে আসে নিহত ব্যক্তির একমাত্র ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে আনারুল নৃশংসভাবে কোদালের আঘাতে বাবাকে হত্যা করে লাশ ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে যায়।
এসপি শহীদ আবু সরোয়ার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার স্বীকার করে যে, তিনি তার বাবাকে রাতের আঁধারে কিছু গোপন কথা বলার জন্য ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে পেছন থেকে সজোরে কোদাল দিয়ে মাথায় একাধিক আঘাত করেন। এতে মাথার মগজ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। এরপর কোদালের আঘাতে বুকের হাড় ভেঙ্গে বাবার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার জানায়, তিনি ৬ বছর সৌদি আরব ছিলেন। তারপর ১ বছরের মতো মালয়েশিয়া থাকার পরে দেশে ফিরে আসেন। তার পরিবার থেকে আবারও বিদেশে যাওয়ার চাপ ছিল। তার বাবা বিভিন্ন জায়গায় জমি বন্ধক ও বিক্রি করে প্লেন ভাড়ার জন্য ৬২ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা থেকে তিনি ৫ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেন। এ কারণে আনোয়ারের একমাত্র ছেলে শিশির (২০) তার বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এই নিয়ে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। এতে বাবা খেজের আলীসহ পরিবারের কেউ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রতিহিংসা থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। আনোয়ারের দেওয়া তথ্য মতে হত্যায় ব্যবহৃত কোদাল উদ্ধার করা হয়েছে। পিবিআইয়ের এই এসপি বলেন, আসামি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেবেন বলে জানিয়েছেন।