ছাত্র-জনতার একদফা দাবির মুখে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে একদিকে যেমন চলেছে উল্লাস; অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, হত্যা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এরই মধ্যে কথা রটেছে সরকার পতনের পর চরম বিপাকে পড়েছে দেশের সংখ্যালঘুরা। তাদের বাড়িঘরে ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
এদিকে, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে চলতি মাসের শুরুতেই শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাজপথে নেমে আসেন শিল্পী সমাজের একাংশ। অনেকেই আবার আওয়াজ তোলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও। আবার কারো মতে, পুরো এ সময়টা নিশ্চুপ ছিলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। আর সেকারণে তাকে ঘিরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি নজরে এসেছে চঞ্চল চৌধুরীর। যা নিয়ে এক ফেসবুক পোস্টও করেন তিনি।
অভিনেতার কথায়, ‘আমি চঞ্চল চৌধুরী বলছি… আমার নাম ব্যবহার করে কোনো বিদেশী/ দেশি পত্র-পত্রিকা বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে যদি কিছু লেখা হয়,তার দায় আমার নয়। কারণ এখন পর্যন্ত আমি কোনো পত্র-পত্রিকা বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো বিষয়ে কোন বক্তব্য দেইনি। আমি সাধারণ একজন শিল্পী। পেশাগত কারণ ছাড়া কোনো কিছুর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমার মায়ের চরম অসুস্থতাজনিত কারণে সাম্প্রতিক সময়ে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব বেশি সক্রিয় নই। দেশে শান্তি বিরাজ করুক, সকলের মঙ্গল হোক।’
বলা দরকার, স্টেজ শোতে অংশ নিতে গেল মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান চঞ্চল চৌধুরী। ছিলেন প্রায় ২০ দিন। দেশে ফিরে মায়ের অসুস্থতার কারণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মায়ের সেবায়।বরাবরই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সবর ছিলেন চঞ্চল চৌধুরী। সবশেষ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে গেল মাসের ১৭ তারিখ একটি ফেসবুক পোস্টও করেন তিনি।
সম্প্রতি এক গণমাধ্যমকে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘এতটা খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাব, সেটি কল্পনাও করিনি। আমি তো সারাটা জীবন মানুষের বিনোদনের জন্য কাজ করে গেছি। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ তো করিনি। রাজনৈতিক এক টিভির জন্য কত ডাক পেয়েছি, কখনও সাড়া দিইনি। চাইলে এমপি-মন্ত্রীও হতে পারতাম। অথচ এখন আমি সেই রাজনীতিরই শিকার। আমার ভক্তরাই আমাকে ভুল বুঝছেন। এই কষ্ট বোঝানোর সাধ্য আমার নেই।’
তার ভাষায় স্পষ্ট, কিছু দুষ্কৃতকারী পরিকল্পনা করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যে মন্তব্য প্রকাশ করে তার খেপিয়ে তুলেছেন। অভিনেতা ছাত্রদের আন্দোলন সমর্থন করেননি, সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে। সব মিলিয়ে চঞ্চল চৌধুরী প্রচণ্ড অস্বস্তি আর হতাশার মধ্যে আছে।