ডলার সংকটের কারণে দুই বছরে রিকন্ডিশন গাড়ির দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। ফলে ফিকে হচ্ছে অনেক মধ্যবিত্তের গাড়ির স্বপ্ন। তাই গাড়ি আমদানিতে অবচয় সুবিধা ৫০ শতাংশ করার দাবি আমদানিকারকদের সংগঠন বারভিডার। সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রাক বাজেট আলোচনায় বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারেরও দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
দেশে ব্যক্তিগত গাড়ি বলতেই বোঝায় জাপান থেকে আমদানি করা ব্যবহৃত বা রিকন্ডিশনড গাড়ি। তুলনামূলক কম দাম, দীর্ঘদিন ব্যবহারের সুবিধাসহ নানা কারণে মানুষের চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রিকন্ডিশনড গাড়ির বাজার। তবে ডলার সংকটসহ নানা কারণে গাড়ির দাম এখন উর্ধ্বমুখী। ব্যবসায়ীরা জানান, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় বেড়েছে আমদানি খরচ। দেড় বছর আগেও যেখানে একটি টয়োটা এক্সিও মডেলের গাড়ি বিক্রি হতো সাড়ে ১৮ লাখ টাকার মধ্যে, সেখানে এখন একই গাড়ির দাম ২৪ থেকে ২৫ লাখ টাকা।
বারভিডা সভাপতি হাবিবুল্লাহ ডন প্রাক বাজেট আলোচনায় বলেন, ‘আমরা ৩৫ পারসেন্ট যেটা অবচয় পাচ্ছি সেই সুবিধাটা আপনি (এনবিআর) যদি দয়া করে ১৫ পারসেন্ট বাড়িয়ে দেন। তাহলে মধ্যবিত্ত যারা গাড়িগুলো কিনতে চান, তারা কিনতে পারবেন।’ হাইব্রিড ও বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে কর ছাড়েরও দাবি করেছে বারভিডা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ্বালানি সাশ্রয়ী এসব গাড়ি আমদানি বাড়লে, কমে আসবে জ্বালানি চাহিদা। ফলে চাপ কমবে জ্বালানি আমদানির। ক্ষতি কম হবে পরিবেশেরও। বর্তমানে বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কসহ ৮৯ ভাগ কর নেয় এনবিআর।
হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, ‘হাইব্রিড এবং ইলেক্ট্রিক্যাল গাড়িগুলোর সারা বিশ্বেই খুব ডিমান্ড। এ জন্য সব দেশেই আপনারা জানেন যে হাইব্রিড ও ইলেক্ট্রিক গাড়ি বাজারজাত করতে সরকার থেকে অনেক ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে।’ আলোচনায় চামড়া শিল্পের কেমিক্যাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় ও পণ্য রপ্তানিতে উৎসে কর কমানোর দাবি জানান ট্যানারি মালিকরা।
চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির পরিচালক অমৃতা মাকিন ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও যেটা বলছেন এক্সপোর্ট ডাইভারসিফিকেশনের কথা। চামড়াজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্য, এগুলো না করলে কিন্তু আমরা ছোট উৎপাদকদের অনবোর্ড করতে পারব না।’
এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘আমরা যখন ডিউটি সাপোর্ট দিতে চাই তখন দেখা যায় যে একদল এই সুবিধাটা নিয়ে এর অপব্যবহার করতে চায়। সেটা কিন্তু তখন সেই ইন্ডাস্ট্রির জন্যই চ্যালেঞ্জ হয়ে আসে। সতর্কভাবে এই সাপোর্টগুলো আমরা দিয়ে থাকি আর কি।’ প্রাক বাজেট আলোচনায় দেশীয় টাইলস ও স্যানিটারি পণ্য উৎপাদনে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানান খাত সংশ্লিষ্টরা।