কার্প জাতীয় মাছের বংশবিস্তার ও প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা।
জানা গেছে, আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত মোট তিন মাস দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হ্রদ কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের মাছ আহরণ, বাজারজাত ও পরিবহনের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, হ্রদে অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণসহ হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশ মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির সহায়ক হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষে প্রতিবছর তিনমাসের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদে কার্প প্রজাতির মা মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করার জন্য ডিম ছাড়ার মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ রাখা প্রয়োজন। কাপ্তাই হ্রদ দেশের কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের একটি অন্যতম স্থান। এ সময় মাছ শিকার বন্ধে কাপ্তাই হ্রদে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। স্থানীয় বরফ কলগুলোও এসময় বন্ধ থাকবে। মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া জানান, এই বছর বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ ঘাটে প্রায় ৭৬০০ মেট্রিক টন মাছ অবতরণ, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। এ থেকে প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত বছর মাছ অবতরণ হয়েছিল ৫৩৮৯ মেট্রিক টন। যা থেকে রাজস্ব আয় হয়েছিল ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। মাছ আহরণ বন্ধ থাকাকালীন সময়ে জেলেদের ২০ কেজিহারে ভিডিএফ চাল বিতরণ করা হবে। রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলা মিলে সরকারি তালিকাভুক্ত প্রায় ২৫ হাজার জেলে রয়েছে। রাঙ্গামাটির জেল প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, হ্রদে অবমুক্ত করা, পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক নিশ্চিতকরণে ২৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে আগামী তিনমাস কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। জেলেরা যাতে বন্ধকাীলন সময়ে সঠিকভাবে খাদ্য সহায়তা পায় সেই বিষয়ে আমরা সচেষ্ট আছি।
তিনি আরও জানান, আশা করছি যথা সময়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে যাবে। মাছ শিকার বন্ধে নৌ পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ টিমও কাজ করে যাবে। এসময় কেউ হ্রদে মৎস্য আহরণ করলে অপরাধ অনুযায়ী তাকে দণ্ড দেওয়া হবে।