ইরানের নবম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী হৃদ্রোগবিষয়ক শল্যবিদ। ইরানের সংস্কারবাদী আইনপ্রণেতাদের একজন এই মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদ।ইনারের সংবাদমাধ্যম পার্স টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৫৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আজারবাইজান প্রদেশের মাহাবাদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। স্কুলের পড়াশোনা শেশেষে প্রথম ডিপ্লোমা অর্জনের পর তিনি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জাবুল শহরে সামরিক বাহিনীতে সার্ভিস দেন। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে দ্বিতীয় ডিপ্লোমা করবেন।
১৯৭৬ সালে তাবরিজ মেডিকেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন তিনি। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ডাক্তারি পড়াশোনা ও জেনারেল সার্জারির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি অর্জন করেন।১৯৯৩ সালে মাসুদ পেজেশকিয়ান ইরান ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্সেস থেকে কার্ডিয়াক সার্জারিতে একটি উপ-স্পেশালিটি লাভ করেন এবং পরে হার্ট সার্জারিতে বিশেষজ্ঞ হন। পাঁচ বছর তাবরিজ ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্সের প্রধানও ছিলেন তিনি।
২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ খাতামির প্রশাসনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পেজেশকিয়ান। ইরানের জাতীয় সংসদে তিনি কয়েকবার সদস্য নির্বাচিত হন। প্রথমবার সংসদ সদস্য হিসেবে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন ২০০৮ সালে।দশম জাতীয় সংসদে উপস্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পেজেশকিয়ান। চলতি বছরের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত সংসদীয় নির্বাচনে তিনি আবার তাবরিজের প্রতিনিধি হিসেবে বিজয়ী হন। এর আগে তিনি দুবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
২০১৩ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়েও মরহুম আলী আকবর হাশেমি রাফসানজানির প্রতি সমর্থন জানিয়ে নির্বাচনী দৌড় থেকে তিনি সরে দাঁড়ান। ২০২১ সালেও তিনি নির্বাচন করার জন্য নাম রেজিস্ট্রেশন করেন। কিন্তু অভিভাবক পরিষদ তাকে অনুমোদন দেয়নি।
চলতি বছর মাসুদ পেজেশকিয়ান ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অংশ নেন। নির্বাচনে তিনি ন্যায়বিচার, ঐক্য ও সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দেন। গতকাল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী সাঈদ জালিলিকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। নির্বাচনের আগে থেকে তিনি বলেছেন, যদি তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেন, তাহলে একটি কমিটি গঠন করবেন—যারা প্রশাসনের কর্মকাণ্ড দেখভাল করবে।প্রসঙ্গত, ইরানের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ১ কোটি ৬৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০৩ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধান পরমাণু আলোচক সাঈদ জালিলি পেয়েছেন ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৯ ভোট।