Skip to content

আট গান নিয়ে আট মিনিটের অ্যালবাম

    আট গান নিয়ে আট মিনিটের অ্যালবাম prothomasha.com

    পার্থিব ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য রুমন দুই যুগের বেশি সময় ধরে ঢাকায় পেশাদার সংগীতের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারুণ্যে রাজশাহীতে ব্যান্ড শুরুর হিসাব ধরলে তা দাঁড়ায় তিন দশকের বেশি সময়। মধ্যে কিছু সময়ের জন্য গান প্রকাশে অনিয়মিত ছিলেন। ২০২০ সালে ‘ঝাপসা’ গান প্রকাশ করে আবার নিয়মিত হন। একের পর এক নতুন গান নিজের প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ করতে থাকেন। আর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রকাশ করেছেন অভিনব এক অ্যালবাম। আটটি গান নিয়ে এই অ্যালবাম, দৈর্ঘ্য আট মিনিট। আছে আলাদা আলাদা গল্পের ভিডিও। ‘অপ্রচলিত’ অ্যালবামটি দিয়ে সবার সামনে নতুন ভাবনার পরিচয় করালেন রুমন।

    ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত আটটায় ‘অপ্রচলিত’ অ্যালবামের আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা হয়। গানগুলো রুমনের ইউটিউব চ্যানেলসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে শোনা যাবে। রুমনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ব্যান্ড তারকাদের মধ্যে মাকসুদুল হক, ফুয়াদ নাসের বাবু, শহীদ মাহমুদ জঙ্গী, হামিন আহমেদ, লাবু রহমান, মানাম আহমেদ, টিপুসহ ব্যান্ড সংগীতের জনপ্রিয় মুখ উপস্থিত ছিলেন।

    রুমনের ভাষ্য, ‘এক মিনিট দৈর্ঘ্য বা তারও কম সময়ের গান থাকতে পারে। আছেও নিশ্চয়ই। কিন্তু আটটি গান দিয়ে আট মিনিটের একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম পৃথিবীতে এর আগে হয়েছে বলে আমার জানা নেই। সে জন্যই অ্যালবামের নাম ‘অপ্রচলিত’। প্রকাশের জন্যও তাই ২৯ ফেব্রুয়ারি দিনটি বেছে নেওয়া। কারণ, এটা বিশেষ দিন, চার বছর পরপরই একবার আসে।’

    সংগীতজীবনের শুরুতে ইগনিয়াস ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পার্থিব ব্যান্ড দিয়ে তরুণ প্রজন্মের গানপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নেন রুমন। তিন দশকের দীর্ঘ সময়জুড়ে ব্যান্ডের রেকর্ডিং এবং স্টেজ শোর পাশাপাশি টুকটাক বিজ্ঞাপনচিত্র, নাটক বা সিনেমার গানেও কাজ করেছেন রুমন। পার্থিব ব্যান্ডের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘বাউন্ডুলে’, ‘চাঁদের আলোয় লাগল গ্রহণ’, ‘মা’, ‘ইমানে বলি ভালোবাসি’, ‘নিঝুম রাতে’, ‘উৎসর্গ নিজেকে’, ‘একা’, ‘জাদুকরি ভালোবাসা’, ‘বাউন্ডুলে-২’, ‘ডুবে আছে মন’ ইত্যাদি।

    রুমনের ভাবনার প্রশংসা করে মাইলস ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য মানাম আহমেদ বলেন, ‘দারুণ লেগেছে ভাবনাটা। যদিও এই প্র্যাকটিস আমরাও করতাম, যখন অ্যালবামের প্রচলন ছিল। তখন একসঙ্গে অনেকগুলো গানের ডামি তৈরি করতাম। যেগুলোর দৈর্ঘ্য এক মিনিট বা তারও কম থাকত। এরপর ব্যান্ড সদস্য ও বন্ধুদের সেগুলো শোনাতাম। যে সুর বা লিরিকটা ভোট পেত, সেটা পরে পূর্ণাঙ্গ গান তৈরি করতাম। তো আমারও রুমনের কাছে এখন চাওয়া, ভালো লেগেছে। এবার গানগুলো শেষ করো!’ উপস্থিত প্রায় সবাই মজা করে তাই বলেছেন, ‘এবার গানগুলো পূর্ণাঙ্গ করো।’ তবে প্রত্যেকেই ভিন্ন ধারার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। সবাই অপেক্ষা করছেন, নতুন ধারার এই গানগুলো শ্রোতারা কেমন করে গ্রহণ করেন, সেটা দেখার জন্য।

    অ্যালবামের দৈর্ঘ্য মাত্র আট মিনিট হলেও এটি তৈরি করতে সময় লেগেছে এক মাসের বেশি সময়। তবে ভাবনাটা এসেছিল গত বছরের মাঝামাঝিতে। সেই গল্প রুমন বললেন এভাবে, ‘গত বছরের একদিন ড্রামার ও ছোট ভাই সামিউল মাশুক এন্টনি কথায় কথায় আমাকে বলেছিল, “আপনি তো গান বানান, একটা প্রজেক্ট করেন। সব গানের ডিউরেশন হবে এক মিনিটের।” আমি হেসে উত্তর দিয়েছিলাম, “করাই যায়।” তবে সত্যি বলতে কি, ব্যাপারটা তখন সিরিয়াসলি নিইনি। তার কিছুদিন বা দুই-এক মাস পর গীতিকবি বাপ্পী খান ভাইয়ের ওয়ালে একটা ছোট্ট লেখা, “এই মেঘলা সুন্দরী রাতে” দেখি। লেখাটা ভীষণ ভালো লাগে। সুর করি সঙ্গে সঙ্গেই। বাপ্পী ভাইকে পাঠাতেই ওনারও খুব পছন্দ হয়। তখনই এন্টনির সেই ভাবনা আবার মাথায় আসে। শুরু হয় এই প্রজেক্ট। বাপ্পী ভাইয়ের ছোট ছোট লেখায় আমি একের পর এক সুর করতে থাকি, সঙ্গে যোগ হতে থাকে গালিব, মারুফ আর মেঘলার লেখা। সেই অনেকগুলো গান থেকে আটটা বেছে নিয়ে তৈরি হয় অ্যালবামটি। গানকে এক মিনিটে আনার জন্য কোনো লেখাকেই সামান্যতম কাটছাঁটও করা হয়নি। এতটুকুই ছিল প্রতিটি লিরিক।’

    ‘অপ্রচলিত’ অ্যালবামে স্থান পাওয়া গানগুলো হলো ‘অন্য ভুবন’, ‘ঝুম’, ‘একটি প্রেমের গল্প’, ‘সে তুমি আর কে?’, ‘প্রসঙ্গ প্রিয়তম’, ‘জলের সিঁড়ি’, ‘নিদারুণ গুনগুন’ ও ‘মেঘলা সুন্দরী রাতে’। অ্যালবামটি নিয়ে রুমন আরও বলন, ‘প্রতিটি গানের আলাদা আলাদা ধাঁচের, শ্রোতা-দর্শকদের নিয়ে যাবে আলাদা ভাবনায়। কখনো জীবনের গভীরে মগ্ন, কখনো ঝুম বৃষ্টিতে বাস্তবে ফেরা। এর মধ্যেই শেষ হবে পুরো অ্যালবাম!’