‘আজ রবিবার’খ্যাত নাট্য নির্মাতা ও প্রযোজক মনির হোসেন জীবন আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল বুধবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা ফরিদুল হাসান।
জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যার দিকে ব্রেইন স্ট্রোক করেছিলেন মনির হোসেন। পরে জরুরিভিত্তিতে তাকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় মনির হোসেনের মরদেহ নেওয়া হয় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে। সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধার নিবেদনের পর সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় তার প্রথম জানাজা। পরে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হবে গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার মনোহরদীতে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার কুতুবদী (বড় বাড়ী) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মনির হোসেন জীবন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এম এ আজিজ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা।
১৯৯০ সালে চাচা সিনেমার পরিচালক বদিউল আলম খোকনের হাত ধরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। বিটিভির প্রথম প্যাকেজ ধারাবাহিক নাটক মামুনুর রশিদের ‘শিল্পী’ এবং হুমায়ূন আহমেদের ‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকের প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন মনির হোসেন। তার কাজের এবং মেধার দক্ষতা দেখে হুমায়ূন আহমেদ তাকে ‘নুহাশ চলচ্চিত্রের’ প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেন।
২০০০ সাল থেকে মনির হোসেন জীবন তার নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা ‘স্বাধীন চলচ্চিত্র’ গঠন করেন। তার প্রযোজনা সংস্থা থেকে তিনি অসংখ্য একক নাটক নির্মাণ করেছেন। এরমধ্যে ‘সাদা কাগজ’, ‘বন্যার চোখে জল’, ‘অপ্রত্যাশিত প্রত্যাশা’, ‘অতঃপর নিঃস্বঙ্গতা’, ‘একজন ময়না’, ‘গানম্যান’, ‘বিবাহ সংকট’, ‘কোরবান আলীর কোরবানী’ উল্লেখযোগ্য।
ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ও টেলিছবি উপহার দিয়েছেন মনির হোসেন জীবন। এর মধ্যে ‘আজ রবিবার’, ‘চোর কাঁটা’, ‘আলী বাবা চল্লিশ স্মাগলার’, ‘অভিমানী’, ‘ফৈজু কবিরাজ’, ‘সেই করেছো ভাল’, ‘নীল ছায়া’, ‘খন্ডচিত্র’, ‘গুজব’, ‘ভবের মানুষ’, ‘ফটিক চোর না সবাই’, ‘গুনীন’, ‘আগন্তুক’, ‘থানার নাম শনির আখড়া’ উল্লেখযোগ্য।