আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৮ লাখ কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার। তিনি বলেন, আগামী বাজেটে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিফলন ঘটবে এবং বাজেট হবে জনগণের বাজেট। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গতকাল মঙ্গলবার গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘বাজেট ২০২৪-২৫: মূল চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ’ শীর্ষক প্রাক্-বাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শহীদুজ্জামান সরকার এসব কথা বলেন।
র্যাপিড চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য মো. নাসির শাহরিয়ার জাহেদী। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ, হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি মো. রেফায়েত উল্লাহ মৃধা। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম আবু ইউসুফ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাঁচ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। বাণিজ্য-আমদানি সংকোচন করায় রাজস্ব খাতে কিছুটা ভয়ের কারণ হয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় সীমাবদ্ধতা হয়তো আছে। এর সঙ্গে আমাদের অর্জনগুলোও বিবেচনা করতে হবে। আমাদের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে, মানুষের চাহিদার ধরন বেড়েছে। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে এখনো পরোক্ষ কর বেশি। অথচ উন্নত বিশ্বে বেশি হচ্ছে প্রত্যক্ষ কর। এত দিন এসব জায়গায় সংস্কার আনা যায়নি। ২০০৯-১০ অর্থবছরের তুলনায় বাজেটের আকার ৮ গুণ বাড়লেও সে অনুযায়ী রাজস্ব আয় বাড়েনি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে।
সংসদ সদস্য মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, রাজস্ব আহরণ একটা পর্যায়ে গিয়ে থেমে গেছে, প্রান্তিক পর্যায়ে পর্যন্ত যেতে পারছে না। যদি মানুষ সুবিধা বুঝতে পারে এবং এর প্রতি আস্থা তৈরি হয়, তাহলে মানুষ কর দিতে আগ্রহী হবে। কর খেলাপিদের বা দুর্নীতিগ্রস্তদের বাড়তি সুযোগ দিলে সাধারণ করদাতারা নিরুৎসাহিত হবেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ব্যবসার ওপর করের চাপ বাড়লে অর্থনীতিতেও চাপ তৈরি হয়, যা নিতে পারে না অর্থনীতি। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী বাজেটে সংস্কারের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে হবে। র্যাপিড চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে রাজস্ব খাতের সংস্কার দরকার। দরকার বাজেটেও বড় ধরনের সংস্কার আনা। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল। তবে নির্বাচনের পরে এখন সংস্কার করার উপযুক্ত সময়।