Skip to content

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু

    অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু prothomasa.com

    শিক্ষার্থী আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গতকাল সোমবার এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেন। তারপর এ নিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ বিষয়ে গতকাল বিকেলে বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।বঙ্গভবন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে অনতিবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। আর লুটতরাজ ও হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধে সেনাবাহিনী পদক্ষেপ নেবে। বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিরা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে গতকাল রাতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকারের রূপরেখা জাতির সামনে হাজির করা হবে।

    সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবির মুখে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর সেনা সদর দপ্তরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল ছাড়াও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রথম আলোকে বলেন, সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলোচনায় মূলত বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হয়।ওই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চমৎকার আলোচনা করেছি। আমরা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশের সব কার্যক্রম এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্বারা পরিচালিত হবে।’আইএসপিআর জানায়, সেনাপ্রধান বলেন, সব হত্যাকাণ্ড ও অন্যায়ের বিচার করা হবে। এ জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে সহিংসতার পথ ছেড়ে তিনি সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান ও ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি অতি শিগগির ছাত্র-শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানান।সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, পরিস্থিতি অচিরেই স্বাভাবিক হয়ে আসবে। ছাত্রছাত্রীসহ দল–মতনির্বিশেষে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

    বঙ্গভবনে বৈঠক-

    গতকাল বিকেলে বঙ্গভবনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বৈঠকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সবাইকে ধৈর্য ও সহনশীল আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন কোনোভাবেই বিনষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে বৈঠকে একমত পোষণ করা হয়।বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হবে। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এবং সম্প্রতি বিভিন্ন মামলায় আটক সব বন্দীকে মুক্তি দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়।বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টির জি এম কাদের, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মজিবুল হক, জামায়াতে ইসলামীর শফিকুর রহমান ও হামিদুর রহমান আজাদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, খেলাফত মজলিসের মামুনুল হক, ইসলামী আন্দোলনের মুফতি ফয়জুল করীম ও আশরাফ আলী, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, ভাসানী অনুসারী অনুষদের চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে রাব্বী প্রমুখ।