যেকোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এক মহা আতঙ্কের নাম। শীতের মৌসুম শেষ হতে না হতেই একের পর এক আগুনের ঘটনার খবর পাওয়া যায়। কখনো বসবাসের বিল্ডিং, কখনো দোকান, শপিংমল, শিল্পকারখানা সহ নানান স্থাপনায়। এতে বস্তুগত সম্পদ যেমন পুড়ছে তেমনই পুড়ছে মানুষের প্রাণ। অথচ এই আগুনের জন্য দায়ী স্রেফ অসাবধানতা। কিন্তু এর থেকে পরিত্রাণের কি কোন উপায় নেই? এই প্রশ্নের উত্তরে ‘নির্বানল-৭১’-এর উদ্ভাবক প্রকৌশলী মো. জাকারিয়া বললেন, আগুন লাগার ঘটনা পুরোপুরি প্রতিরোধ করা না গেলেও ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটিও লাগসই হতে পারে।
‘নির্বানল-৭১’ একটি Internet of Thinks (IoT) Based Device, যেটি Artificial Intelligence (AI) বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের National Fire Protection Association (NFPA) গাইডলাইন অনুসরণ করা হয়েছে। জাকারিয়ার ভাষ্যমতে, ‘নির্বানল-৭১’ ৪টি ধাপে অগ্নিদুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে। কোনো ভবনের কোনো রুমে শর্টসার্কিট হলে সুনির্দিষ্টভাবে সেই রুমের বিদ্যুৎ বন্ধ হবে, অথবা যদি কোনো প্রাকৃতিক উৎস থেকে ধোঁয়া কিংবা ৬৭° সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা পাওয়া যায় তাহলে বিদ্যুৎ বন্ধের পাশাপাশি পানি বা গ্যাস প্রয়োগ করবে। এছাড়া অ্যালার্ম বাজবে, ফায়ার সার্ভিস ও জরুরি পরিস্থিতিতে সাড়াদানকারী অন্যান্য সংস্থার কাছে ঘটনাস্থলের ঠিকানা উল্লেখ করে এসএমএস করবে। এছাড়া ওয়েব মনিটরে পরিস্থিতির রিয়েল-টাইম আপডেট দেবে।
২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকান্ডের ঘটনার ভয়াবহতা দেখে এমন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করেন জাকারিয়া। তিনি তখন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিলেন। আইসিটি বিভাগের অর্থায়নে এই কাজটিতে দীর্ঘ আট বছরের চেষ্টায় সফল হয়েছেন তিনি। প্রকৌশলী জাকারিয়া বলেন, ‘নির্বানল ৭১’-এর সঙ্গে ক্যামেরা সংযোজন করে পুরো সিস্টেমটি আরও আধুনিক করা হচ্ছে। এর ফলে আগুন লাগার সঠিক কারণও জানা যাবে খুব সহজে। এক্ষেত্রে কেউ চক্রান্ত করে আগুন লাগালে তাকেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করা যাবে। দ্রুতই এই প্রযুক্তিটি বাজারজাত করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন জাকারিয়া।