দেশের স্টীল খাতে বিনিয়োগ করবেন চীনের উদ্যোক্তারা। বর্তমান এ খাতে ৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। আগামী দু'বছরের মধ্যে সেই বিনিয়োগ বেড়ে ১০ বিলিয়ন ডলার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। শুক্রবার সকালে দেশে প্রথমবারের মতো দুদিনব্যাপী ‘চীন-বাংলাদেশ ষ্টীল বিজনেস সামিট-২০২৪’ উদ্বোধন করা হয়। এই সামিটে চীনের ২৪টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফরের আগে এই সম্মেলন দুদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে আশা প্রকাশ করছেন ষ্টীল খাতের উদ্যোক্তারা। তাঁদের মতে, সামিটের মাধ্যমে চীনের ষ্টীল খাতের বড় বড় বিনিয়োগকারীরা এদেশে বিনিয়োগ করতে আকৃষ্ট হবেন।
রাজধানী ঢাকার রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত যৌথভাবে চীন-বাংলাদেশ ষ্টীল বিজনেস সামিটের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আয়রণ এ্যান্ড ষ্টীল ইম্পোর্টারস এ্যাসোসিয়েশন এবং চীন ষ্টীল ইম্পোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আয়রণ এ্যান্ড ষ্টীল ইম্পোর্টারস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুজার গিফারী জুয়েল বলেন, এই সামিটের মূল লক্ষ্য স্টীল খাতে চীনের বিনিয়োগ আকর্ষণ করা। ইতোমধ্যে বি-টু-বি বৈঠকে এ ব্যাপারে তারা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আগামী দুই বছরের মধ্যে এ খাতের বিনিয়োগ ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আমির হোসেন নূরানী চীনা উদ্যোক্তাদের স্বাগত জানিয় বলেন, দেশের অবকাঠামো খাতে ব্যাপক কাজ হচ্ছে এবং দিন দিন স্টীলের চাহিদা বাড়ছে। আপনারা এ খাতে বিনিয়োগ করলে লাভবান হতে পারবেন। চায়না এ্যালায়েন্স এক্সপোর্টার ও ইনভেষ্টরের সভাপতি গেন্ড বো বলেন, বাংলাদেশের স্টীল খাতে চীনের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ আগ্রহী। আর এ কারণেই আমন্ত্রণ গ্রহণের পাশাপাশি যৌথভাবে সামিট আয়োজনে সহযোগিতা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশী-বিদেশী মিলিয়ে প্রায় চার শতাধিক ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী বিজনেস সামিটে অংশগ্রহণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে আবুজার গিফারী জুয়েল আরও বলেন, প্রথমবারের মতো দেশে চীন-বাংলাদেশ স্টীল ব্যবসায় সম্মেলন-২০২৪ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে চীনের উদ্যোক্তারা এখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে আরও বেশি উৎসাহিত হবেন। স্টীল খাতে দেশে যৌথ বিনিয়োগ বাড়বে।তিনি বলেন, যেকোন অবকাঠামো নির্মাণ কিংবা যন্ত্রপাতি তৈরিতে স্টীল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বা কাঁচামাল। আসলে স্টীল ছাড়া কিছুই হয় না।
অন্যদিকে চীন থেকেই অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে বেশি স্টীল আমদানি করা হচ্ছে। এ বাস্তবতায় স্টীল খাতে চীনের উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলে দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী- সমৃদ্ধ হবে। এ খাতে বাড়বে কর্মসংস্থান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে যাচ্ছেন। আশা করছি, তাঁর এই সফরের আগে এ ধরনের একটি ব্যবসায় সম্মেলন চীন-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কে আরও জোরদার করবে।
এদিকে দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন ৫ জলাই শুক্রবার সকাল ১০ টায় শুরু হয়েছে। চলবে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। প্রথম দিন ব্যবসায়ী টু ব্যবসায়ী (বিটুবি) একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের দ্বিতীয় ও আজ শেষদিনে দিনে বাংলাদেশ নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম অংশ গ্রহণ করবেন। এদিন অতিথিদের সম্মানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করা হবে।
prothomasha.com
Copy Right 2023