সক্রিয় রাজনীতিতে পুনরায় আসার সম্ভাবনা না থাকলেও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাবা তাজউদ্দীন আহমদের আদর্শে গড়া আওয়ামী লীগই শেষ ঠিকানা। এক খোলা চিঠিতে এমনটাই জানিয়েছিলেন তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজ। বাবা ও মায়ের রাজনৈতিক সহকর্মীদের পরামর্শ এবং কাপাসিয়ার মানুষের অনুরোধেই এক সময় সক্রিয় রাজনীতিতে এসেছিলেন তিনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও শরীরে বয়ে চলা বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের রক্ত তাকে অনুপ্রাণিত করেছিল সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যোগ দিতে এবং দেশের মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে।
কিন্তু এক সময় অভিমান নিয়ে সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছেন তিনি। দেশের মানুষকে বুঝাতে পেরেছেন ক্ষমতা, অর্থসম্পদ, খ্যাতি-প্রতিপত্তির জন্য রাজনীতিতে যোগ দেননি সোহেল তাজ। তিনি মনে করেছেন রাজনৈতিক প্লাটফরমের বাইরে থেকে আরও ভালো কিছু করা সম্ভব, দেশের মানুষের জন্য।কিন্তু তারপর?
বাংলাদেশের স্বাধীনতার অন্যতম রূপকার তাজউদ্দীন পুত্র তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে এখন পর্যন্ত দেশের মানুষের জন্য কি করেছেন? কতটুকু করতে পেরেছেন? সোহেল তাজের উদ্দেশ্যে এক ‘খোলা চিঠি’তে এমন কিছু প্রশ্ন করে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক, লেখক আসিফ নজরুল।
তিনি লিখেছে, ‘জনাব সোহেল তাজ, আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় তাজউদ্দীন আহমদের পুত্র। সততা, নীতিবোধ, বুদ্ধিমত্তা ও নির্ভীক চিত্তের মানুষ ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। তিনি না থাকলে মুজিবনগর সরকার আদৌ গঠিত হতে পারতো কিনা বা সফলভাবে কাজ করতে পারতো কিনা সন্দেহ আছে! তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার অন্যতম রূপকার।
সোহেল তাজের প্রতি আমাদের অনেকের ভালোবাসা কাজ করে তার বাবা বা তার নীতিবান মা-এর জন্য। এছাড়া, তিনি নিজেও বছর পনেরো আগে ব্যক্তিত্ব ও সততার পরিচয় রেখে শেখ হাসিনার সরকারের প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু এরপর? আজ অনলাইনে দেখলাম তিনি তার মা-এর ২০১৮ সালে লেখা একটা চিঠি প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি সোহেল তাজকে লিখেছেন, “বাবার অনেক আরাধ্য কাজ পড়ে আছে, নিজেকে যোগ্য করে তৈরী হতে হবে!”
সোহেল তাজ এতোবছরে আপনি কি তা করেছেন? এতো যে অন্যায় অবিচার চলছে দেশে, কোন প্রতিবাদ করেছেন? নাকি অপুষ্ট বা ক্রীতদাস মস্তিস্কের মানুষের মতো আপনিও ভাবেন, আওয়ামী আমলের সকল অনাচার (অর্থ পাচার, ব্যংক লুট, নির্বাচন প্রক্রিয়া হত্যা, গুম-নিপীড়ন, ভারতের পক্ষে স্বার্থ, ত্যাগ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ইত্যাদি) সহ্য করাই দেশপ্রেম বা প্রগতিশীলতা?
চাইলে অবরিন্দ কেজরিয়ালের মতো শক্ত একটা কণ্ঠ আপনি হতে পারতেন এই বিপর্যয়কর সময়ে! তাহলে ভবিষ্যতে অন্য আমলেও আপনার কথা অনেক গুরুত্ব পেতো। আপনি হতে পারতেন এদেশের কোটি কোটি হতাশাগ্রস্থ তরুণদের স্বপ্ননায়ক! কেন সেই চেষ্টা করলেন না ভাই? বা কেন আপনার এমন কোন চেষ্টা আমাদের নজরে পড়লো না?’