একটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি ছিলেন রমিজ মিয়া (৫৬)। পুলিশ তাঁকে ধরে হাতকড়া পরানোর সময় ধস্তাধস্তি করে তিনি দৌড়ে পালান। পুলিশও দৌড়ে তাঁকে ধরে এলোপাতাড়ি মারধর করলে তিনি মারা যান বলে অভিযোগ স্ত্রী জোছনা বেগমের। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বুরুঙ্গামারা গ্রামে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
তবে পুলিশ বলছে, তাঁরা রমিজকে মারধর করেনি। তিনি শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন। পুলিশের হাত থেকে ছুটে দৌড়ে পালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, রমিজ মিয়া তাহিরপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা একটি মামলার আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। উপজেলার সীমান্তবর্তী টেকেরঘাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জিয়াউর রহমানসহ দুজন পুলিশ সদস্য গতকাল সন্ধ্যায় রমিজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে যান। তিনি তখন বসতঘরেই তাঁর চায়ের দোকানে বসা ছিলেন। পুলিশ তাঁকে ধরে হাতকড়া পরানোর সময় তিনি ধস্তাধস্তি করে পুলিশের হাত থেকে ছুটে দোকানঘরের পেছন দিকে দৌড়ে পালান। পুলিশ সদস্যরাও তাঁকে ধরতে তাড়া করেন।
পুলিশের ভাষ্য, রমিজ মিয়া পালিয়ে গ্রামের সালমা বেগমের বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর মাথায় সেখানে লোকজন পানি ঢালেন। মানুষ জড়ো হওয়ায় পুলিশ সদস্যরা ওই বাড়িতে না গিয়ে ফিরে আসেন। পরে খবর আসে, রমিজ মারা গেছেন। রমিজ মিয়ার স্ত্রী জোছনা বেগমের অভিযোগ, পুলিশ তাঁর স্বামীকে ধরে নাকেমুখে কিল-ঘুষি মারে। লাঠি ও নারকেলগাছের ঢাল দিয়ে মারধর করে। এতে তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ফেলে রেখে পুলিশ সদস্যরা মোটরসাইকেলে করে সেখান থেকে চলে যান। পরে তাঁকে বাড়িতে আনা হলে তিনি মারা যান।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে তাহিরপুর থানা থেকে পুলিশ গিয়ে রাতেই রমিজ মিয়ার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ব্যাপারে এএসআই জিয়াউর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘উনি (রমিজ) পালানোর পর আমরা তাঁকে আর ধরতে পারিনি। কিছু সময় খোঁজাখুঁজি করে পরে আমরা চলে আসি। তাঁকে মারধরের প্রশ্নই ওঠে না। এসব কথা সত্য নয়।’
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস আজ বুধবার বলেন, রমিজ মিয়া দৌড়ে পালিয়ে গ্রামের এক বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুলিশ সেখানে যায়নি। তিনি শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন। পুলিশ তাঁকে মারধর করেনি। তবু তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
prothomasha.com
Copy Right 2023