সাফা-মারওয়া ঐতিহাসিক দুটি পাহাড়। এই পাহাড় দুটি সায়ি করা মহান আল্লাহর অনন্য এক নিদর্শন। পবিত্র হজ ও ওমরা পালনকারীদের সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের সায়ি করা ওয়াজিব। তবে সেটি সুন্নতি পদ্ধতিতে করতে হবে, তা না হলে ওয়াজিব আদায় হবে না। আর কেউ তা করতে ভুলে গেলে বা ইচ্ছাকৃত না করলে তার ওপর কাফফারা হিসেবে দম ওয়াজিব হবে। বেশ কিছু দোয়া রয়েছে যেগুলো সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সায়ি করার সময় পড়তে হয়। সে দোয়াগুলো হচ্ছে- হজ ও ওমরা পালনকারীদেরকে তাওয়াফের পর মাকামে ইবরাহিমে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে (সম্ভব হলে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করে) ‘বাবুস সাফা’ দিয়ে সাফা পাহাড়ে আরোহণ করবে আর এ আয়াত পাঠ করবে-
উচ্চারণ: ইন্নাস সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিন শাআয়িরিল্লাহি ফামান হাজ্জাল বাইতা আয়িতামারা ফালা ঝুনাহা আলাইহি আইয়্যাতত্বাওয়াফা বিহিমা ওয়া মান তাত্বাওওয়াআ খাইরান ফাইন্নাল্লাহা শাকেরুন আলিম।
অর্থ: নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই যে কেউ (কাবা) ঘরের হজ বা উমরা সম্পন্ন করে, এ দু’টির মধ্যে সায়ি করলে তার কোন পাপ নেই। আর যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন সৎকাজ করবে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ উত্তম পুরস্কারদাতা, সর্বজ্ঞ। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৮) অতঃপর কেবলামুখী হয়ে,
উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলা। সাফা পাহাড়ে উঠে কাবার দিকে মুখ করে উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত তুলে এ দোয়াটি ৩ বার পাঠ করা-
উচ্চারণ: আবদাউ বিমা বাদাআল্লাহু বিহি ইন্নাস সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিন শাআইরিল্লাহ’ উপর্যুক্ত দোয়ার সঙ্গে ৩ বার হামদ ও ছানা পাঠ করা। অত:পর উচ্চস্বরে তাকবির ও তাহলিল পড়া-
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িং কাদির। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু আনজাযা ওয়াদাহু, ওয়া নাসারা আবদাহু, ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু।
এর পরে দরুদ পাঠ করা এবং নিজের জন্য প্রয়োজনীয় দোয়া করে সাফা থেকে মারওয়ার দিকে চলতে শুরু করা। সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী সবুজ চিহ্নিত স্থান পুরুষরা দৌঁড়ে অতিক্রম করবে আর নারীরা দৌঁড়াবে না। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, এত দ্রুত অতিক্রম করা যাবে না যে, সঙ্গে কোনো নারী সঙ্গী থাকলে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর সবুজ বাতি চিহ্নিত নির্ধারিত স্থানটি দ্রুততার সঙ্গে অতিক্রম করার সময় এ দোয়াটি পড়া-
উচ্চারণ: রাব্বিগফির ওয়ারহাম আনতাল আআযযু ওয়াল আকরাম।
সবুজ চিহ্নিত স্থান অতিক্রম করার পর নারী-পুরুষ সবাই স্বাভাবিক গতিতে হেঁটে সায়ি করবে। সায়ির সময় স্বাভাবিকভাবে এ দোয়া বেশি বেশি পড়বে-
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদু। আল্লাহুম্মা হাব্বিব ইলাইনাল ইমানা ওয়া কাররিহ ইলাইনাল কুফরা ওয়াল ফুসুক্বা ওয়াল ইসয়ানা ওয়াঝআলনা মিন ইবাদিকাস সালিহিন।
মারওয়া পাহাড়ে গিয়েও সাফা পাহাড়ের মতো হামদ ছানা, দরুদ ও দোয়া করে পুনরায় সাফা পাহাড়ের দিকে রওনা করা। সাফার দিকে যাওয়ার সময় আবার এ দোয়া পড়া-
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদু। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু সাদাক্বা ওয়াদাহু ওয়া নাসারা আবদাহু ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া লা নাবুদু ইল্লা ইয়্যাহু মুখলিসিনা লাহুদদ্বীন ওয়া লাও কারিহাল কাফিরুন। রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতাল আআযযুল আকরাম। ইন্নাস সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিং শাআয়িরিল্লাহি ফামান হাজ্জাল বাইতা আয়ি’তামারা ফালা ঝুনাহা আলাইহি আঁইয়্যাতত্বাওয়াফা বিহিমা ওয়া মাং তাত্বাওওয়াআ খাইরান ফাইন্নাল্লাহা শাকেরুন আলিম। মারওয়া থেকে সাফা পাহাড়ে আসার সময়ও সবুজ চিহ্নিত স্থানে পূর্বোল্লিখিত দোয়া পড়া-
উচ্চারণ: রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতাল আআযযুল আকরাম। সাফা-মারওয়ায় সায়ি শেষ হওয়ার পর এ দোয়া পড়া-
উচ্চারণ: রাব্বানা তাক্বাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আনতাছ্ ছামিউল আলিম। ওয়অতুব্ আলাইনা ইন্নাকা আংতাত্ তাওয়্যাবুর্ রাহিম। ওয়া সাল্লাল্লাহু তাআলা আলা খাইরি খালক্বিহি মুহাম্মাদিউ ওয়া আলিহি ওয়া আসহাবিহি আজমাইন ওয়ারহামনা মাআহুম বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।